শুক্রবার, ৩০ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

ত্বকের প্রদাহজনিত রোগ ‘ডারমাটাইটিস’

ত্বকের প্রদাহজনিত রোগ ‘ডারমাটাইটিস’

প্রদাহজনিত রোগের মধ্যে ডারমাটাইটিসই ত্বকে সর্বাধিক দেখা যায়। অনেকে ত্বকে কোনো ধরনের র‍্যাশ/ফুসকুঁড়ি হলেই ডারমাটাইটিস বা একজিমা মনে করেন, এ ধারণা ঠিক না। আবার ডারমাটাইটিস এবং একজিমা সম্পূর্ণ আলাদা রোগ। ডারমাটাইটিস ছাড়াও ত্বকের অনেক রোগে র‍্যাশ/ ফুসকুঁড়ি দেখা যায়। এটি কোনো বিশেষ স্থান বা সমস্ত শরীরে হতে পারে। নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সবাই আক্রান্ত হতে পারেন।

কেমন দেখতে : ডারমাটাইটিসের ফুসকুড়ি লাল, ধারযুক্ত বা ধারহীন হতে পারে। এ রোগে আক্রান্তের সময় এর ভিত্তিতে ফুসকুড়িতে পানি বা স্তরের আবরণ থাকতে পারে। তবে চুলকানি অবশ্যই থাকবে। স্বল্প সময়ের হলে পানি বা ভেজা থাকে কিন্তু অনেক দিনের হলে স্তরযুক্ত আবরণ থাকে। এছাড়া অনেক সময় হলুদাভ পুঁজ থাকতে পারে।

ধরন কি কি : কি উপায়ে বা কি কারণে ডারমাটাইটিস হয়েছে, এর ওপর ভিত্তি করে একে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন- আল্ল্যেরজিক কনটাক, ইররইতেন্ত কনটাক, এটোপিক বা বংশগত, ডিসহাইড্রটিক, সেবরিক, লিচেন সিমপ্লেক্সক্রনিকাস নুম্মুলার, ডাইয়াপার, স্তাসিস, কসমেটিক বা প্রসাধনীজনিত ইত্যাদি।

চিকিৎসা : কি ধরনের ডারমাটাইটিস হয়েছে নির্ণয়ের পর উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়। ত্বকে লাগানোর ক্রিম, লোশন দেওয়া হয়। মুখে খাবার ওষুধও লাগতে পারে। অন্যদিকে ইনফেকশন হলে অবশ্যই অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

জটিলতা : ডারমাটাইটিসে ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোনো ইনফেকশন হতে পারে। আক্রান্ত স্থানে ক্ষত বা অমসৃণ ধারণ করতে পারে। আক্রান্ত স্থানের রং, অন্য স্থানের চেয়ে আলাদা হয়ে যেতে পারে।

প্রতিরোধ : ত্বক মসৃণ রাখার চেষ্টা করুন, ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ত্বক ক্ষতি করতে পারে এমন কোনো বস্তু থেকে দূরে থাকুন। নতুন কোনো প্রসাধন ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন ডারমাটাইটিস ছাড়াও ত্বক এবং শরীরের ভিতরের অনেক রোগেও ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। ডারমাটাইটিসের চিকিৎসা গ্রহণ করতে দেরি করলে জটিল ইনফেকশন হতে পারে এবং শিশুদের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত ছড়িয়ে জীবনহানির কারণ হতে পারে, কাজেই সময়মতো চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন। এসব ক্ষেত্রে অবহেলা করা মোটেও ঠিক নয়। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে যে কোনো জটিলতা এড়ানো যায়। আমাদের মনে রাখতে হবে রোগ-বালাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক ও কসমেটিক রোগ বিশেষজ্ঞ, (জাকার্তা প্রবাসী চিকিৎসক)।

সর্বশেষ খবর