বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইজতেমায় মুসল্লিদের স্বাস্থ্যকুশল

ডা. সজল আশফাক

ইজতেমায় মুসল্লিদের স্বাস্থ্যকুশল

ফাইল ছবি

টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে আগামী সপ্তাহ শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এটি মুসলমানদের একটা বড় জমায়েত। শীতকালে এবং খোলা মাঠে ইজতেমা হওয়ার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা বেশি। ইনফেকশনের মধ্যে শেভ বা ক্ষৌরকর্ম করার প্রাক্কালে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং সি এর ঝুঁকিরও কথা মনে রাখা উচিত। তবে এসব স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রায় সবই প্রতিরোধ করা কিংবা এড়ানো সম্ভব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে। প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতামূলক সাধারণ ব্যবস্থাগুলো হলো— অদম্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ইজতেমার উদ্দেশে যাত্রা করার প্রাক্কালে একজন মুসল্লির কাছে কোনো কিছুকেই আর বাধা মনে হয় না। এই মানসিকতার বশবর্তী হয়ে অনেকে অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়েন। যার ফলে দেখা যায়, যাত্রার আগেই ক্যাম্পে তিনি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। এটা কখনোই কাম্য নয়। তাই শুরুতেই শক্তি সঞ্চয়ের জন্য ধীরস্থির থাকতে হবে। অহেতুক ছোটাছুটি এখানে কাম্য নয়। * পানি স্বল্পতাজনিত ঝুঁকি এড়াতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। রাতে ভ্রমণ করতে হবে। কিছুটা লবণাক্ত খাবার এ সময়ে দরকার হয়, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া লবণের ঘাটতি মেটানোর জন্য। * শরীরের পানিস্বল্পতা এড়াতে সঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে সৃষ্ট শারীরিক অবসাদ কাটাতে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে। * বেশির ভাগ মুসল্লি গলাব্যথা, কাশি, ঘনঘন হাঁচি, সর্দি এবং জ্বরে ভুগে থাকেন। হঠাৎ পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য এমনটি হয়ে থাকে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সাধারণ কিছু ওষুধপত্র যেমন— ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল, হাঁচি-সর্দির জন্য ফেক্সোফেনাডিন জাতীয় ওষুধ, কাশির জন্য এডোভাস সিরাপ কিংবা সিনেকড ট্যাবলেট গ্রহণ করা যেতে পারে। এগুলো অল্প করে সঙ্গে নিয়ে যাওয়াই ভালো। * ইজতেমার উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকে মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। কারণ এই দিনগুলোতে সুষম খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে। সেই ঘাটতি পূরণে প্রতিদিনই মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। * যদি কারও অ্যাজমা-হাঁপানি থাকে তখন অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে পথে কীভাবে চলতে হবে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা ও প্রস্তুতি থাকতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে হাঁপানির প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো। * মসজিদে বা অন্য কোথাও চলাফেরার সময় তীব্র বা কড়া সুগন্ধি ব্যবহার করা উচিত হবে না। কারণ সুগন্ধি হাঁপানি এবং বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা মাইগ্রেনের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয় বলে মনে করা হয়। * এ সময় অনেক হাঁটতে হয়। কাজেই ইজতেমায় আসার পূর্বে হাঁটার প্রস্তুতি নিতে হবে। হঠাৎ অতিরিক্ত হাঁটার কারণে পায়ের মাংসপেশিতে খিল ধরতে পারে কিংবা কিছুটা ব্যথা হতে পারে। * এ সময় ভিড়ের মধ্যে একজন থেকে অন্যজনের দূরত্ব কম থাকে। এত কাছাকাছি অবস্থানের কারণে যে কোনো সংক্রামক রোগ খুব সহজেই ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। কাজেই ঝুঁকি এড়াতে অবস্থানস্থল থেকে বের হওয়ার সময় মুখে মাস্ক বা মুখোশ পরা যেতে পারে। * যারা চশমা ব্যবহার করেন, বাড়তি চশমা তাদের সঙ্গে নেওয়া উচিত। * ইজতেমায় সবাই একসঙ্গে বসবাস করেন। তাই এ সময় ব্যক্তিগত বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করার চেষ্টা করতে হবে।

লেখক : স্বাস্থ্য নিবন্ধকার, নিউইয়র্ক থেকে।

সর্বশেষ খবর