লক্ষ্য রাখতে হবে ঈদের সময় যেন একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে সুস্থ থাকতে পারি। বিশেষ করে কোরবানির ঈদের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। খাবারে কোলেস্টেরল অথবা ক্ষতিকর চর্বির প্রভাব কমাতে সঠিক মেনু প্লানিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—গরু ও খাসির মাংসের সঙ্গে কিছু কোলেস্টেরল কন্ট্রোলিং ফুড যেমন সলুবল ফাইবার সমৃদ্ধ ফুড রাখতে পারি। দ্রবণীয় ফাইবার পাই আমরা বিভিন্ন ফল ও সবজি থেকে। যেমন—শিম, বরবটি, গাজর, পেয়ারা, আপেল ইত্যাদি। এ ছাড়াও গরু-খাসির বিভিন্ন অংশের মাংসের ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণের তারতম্য রয়েছে। যেমন—রানের মাংসের ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ সিনার মাংসের তুলনায় কম, আবার প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। ১০০ গ্রাম গরুর কলিজাতে কোলেস্টেরল আছে প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম এবং ১০০ গ্রাম মগজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ প্রায় ২৫০০ মিলিগ্রাম। আমাদের আরও জানা প্রয়োজন, ১০০ গ্রাম গরুর মাংস থেকে প্রায় ১২২ মিলিগ্রাম এবং ১০০ গ্রাম খাসির মাংস থেকে ৯৫-১০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল পেয়ে থাকি। মেনু তৈরির পাশাপাশি কিছু স্বাস্থ্যসম্মত রন্ধন প্রণালির ব্যবহার করে আমরা খাবারের কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই আসবে তেলের ব্যবহার। গরু এবং খাসিতে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে বলে যতটা সম্ভব কম অসম্পৃক্ত উদ্ভিজ তেল ব্যবহার করে রান্না করা বাঞ্ছনীয়। যেমন—কাবাব আমরা ডুবো তেলে না ভেজে তেল ব্রাশ করে সেঁকে নিতে পারি। ঝলসানো কাবাবের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তেল ব্যবহার না করলেও চলে। এ ছাড়া রান্নায় টকদই, লেবুর রস, রসুন, সিরকা ইত্যাদি ব্যবহার করে কোলেস্টেরলের শোষণকে কমিয়ে আনা যায়। বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে, রান্নার আগে মাংস থেকে যতটা সম্ভব চর্বি কেটে বাদ দিতে হয়। যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তারা মাংস রান্নার আগে একটু সিদ্ধ করে পানিতে ভাসমান চর্বিগুলো ফেলে রান্না করুন। এমনকি রান্নার পরে খাবারের উপরিভাগে যে জমাট চর্বির আবরণ থাকে তা আলাদা করলে মাংস কিছুটা চর্বি মুক্ত হয়।
চৌধুরী তাসনীম হাসীন
চিফ নিউট্রিশনিস্ট, ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড।