জরায়ুর বাইরে যেকোনো স্থানে গর্ভধারণ হলে তাকে একটোপিক প্রেগনেন্সি বলা হয়। সাধারণত এই প্রেগনেন্সি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিম্বনালিতে হয়ে থাকে। এছাড়া অন্য স্থানগুলো হলো ডিম্বাশয়, সারভিক্স বা পেটের ভিতরস্থ যেকোনো স্থান। প্রতি ১০০০টি প্রেগনেন্সির মধ্যে ১১ জনের ক্ষেত্রে একটোপিক প্রেগনেন্সি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কাদের হয় : কারও কারও ক্ষেত্রে একটোপিক প্রেগনেন্সি হওয়ার রিস্ক বেশি থাকে, যেমন— যাদের একবার একটোপিক প্রেগনেন্সি হয়েছে তাদের পুনরায় হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০ গুণ বেড়ে যায়। কোনো কারণে ডিম্বনালির স্বাভাবিক এনাটমি ও গঠন নষ্ট হলে, যেমন পেলভিক ইনফেকশনের হিস্ট্রি থাকলে একটোপিক হওয়ার চান্স বেড়ে যায়। জন্মগতভাবে ডিম্বনালির গঠনগত সমস্যা থাকলে। ইন-ভিট্র ফার্টিলাইজেশন বা টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার
ক্ষেত্রে এবং কপার-টি পরা অবস্থায় প্রেগনেন্সি হলে।লক্ষণ : ডিম্বনালি রাপচার বা ফেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই রোগের কোনো লক্ষণ থাকে না। টিউব ফেটে যাওয়ার সময় কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। এ সময় রোগী হঠাৎ করে প্রচণ্ড পেটে ব্যথা অনুভব করে, অনেকে জ্ঞান হারিয়েও ফেলতে পারেন। পেটের ভিতর রক্তক্ষরণ হতে থাকলে ব্লাড প্রেশার কমে যায়, পালস বেড়ে যায় ইত্যাদি। তবে এই লক্ষণগুলো দিয়ে একটোপিক প্রেগনেন্সি নিশ্চিত হওয়া যায় না। গর্ভধারণের লক্ষণ বোঝার আগেই অর্থাৎ পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে বা কিছুদিনের মধ্যে এ ধরনের ব্যথায় আক্রান্ত হলে অনেকে ভুল করে একে এপেন্ডিসাইটিস বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা মনে করে থাকেন। যার কারণে দেখা যায় প্রথমে মেডিসিন বা সার্জারির ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। যা পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একটোপিক প্রেগনেন্সি নির্ণয় হয়।
ডা. নুসরাত জাহান
সহযোগী অধ্যাপক (গাইনি-অবস), ডেলটা মেডিকেল কলেজ, মিরপুর, ঢাকা।