সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘স্পাইরোমেট্রি’

অ্যাজমা একটা অ্যালার্জি জাতীয় শ্বাসনালির প্রদাহজনিত দীর্ঘমেয়াদি রোগ। প্রদাহের ফলে শ্বাসনালিগুলো চিকন হয়ে শ্বাস প্রশ্বাসের সময় ফুসফুসে বাতাস ঢুকতে ও বের হতে বাধা পায়, যে কারণে বুকের মধ্যে শব্দ হয় ও বায়ু তথা অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্ট হয়। অন্যদিকে সিওপিডিও শ্বাসনালির প্রদাহজনিত ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি সম্পূর্ণ আলাদা একটি রোগ।  চল্লিষোর্ধ্ব বয়স্ক পুরম্নষদের সাধারণত এ রোগ হয়ে থাকে।

আমরা জানি শ্বাসই জীবন। কারণ, শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে বায়ু থেকে জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য অক্সিজেন শরীর পেয়ে থাকে। শরীরে অক্সিজেনের অভাব হলে শ্বাসকষ্ট হয়, আর শ্বাসনালির প্রদাহের কারণে কাশি হয়। সে কারণে অ্যাজমা ও সিওপিডি উভয় রোগে শ্বাসকষ্ট ও কাশি হয়। অ্যাজমা প্রদাহ অস্থায়ী, চিকিৎসায় বা কোন কোন সময় এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে ভবিষ্যতে যেকোন সময় পুনরায় আক্রান্ত্ম হতে পারে। অপরদিকে সিওপিডির প্রদাহ চলমান থাকে ও দিন দিন বাড়তে থাকে। একবার আক্রান্ত্ম হলে আর ভালো হয় না এমনকি চিকিৎসা নিলেও।

অনেক সময় অ্যাজমার রোগীদের  ধূমপান ও বায়ুদূষণের ফলে উভয় সমস্যা একত্রে হতে পারে যার নাম ‘অ্যাজমা-সিওপিডি ওভারল্যাপ’। এ রোগের পরিণতি ‘অ্যাজমা’ বা ‘সিওপিডি’র থেকে খারাপ।

‘অ্যাজমা’, ‘সিওপিডি’ ও ‘অ্যাজমা-সিওপিডি ওভারল্যাপ’ রোগ তিনটি সম্পূর্ণ আলাদা। এর চিকিৎসা ও পরিণতিও আলাদা। সে জন্য চিকিৎসা দেওয়ার আগে অবশ্যই রোগটির কোনটা তা নিশ্চিত হতে হবে। শুধু রোগের ইতিহাস জেনে এবং রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করে রোগ তিনটিকে পৃথক করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক পরীক্ষা। উল্লেখযোগ্য পরীক্ষা- ‘স্পাইরোমেট্রি’। এটি একটি কম্পিউটারাইজড শ্বাসনালির তথা ফুসফুসের কার্জক্ষমতা নিরূপণের অত্যন্ত কার্যকরী টেষ্ট। এই একটিমাত্র টেষ্টের মাধ্যমে সিওপিডি নিশ্চিত করা যায় এবং ‘অ্যাজমা’, ‘সিওপিডি’ ও ‘অ্যাজমা-সিওপিডি ওভারল্যাপ’ রোগ তিনটি নিশ্চিতভাবে আলাদা করে সঠিক চিকিৎসা করা যায়।

ডা. এস এম লুত্ফর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক,

রেসপিরেটরি মেডিসিন, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিইট।

 

 

সর্বশেষ খবর