কভিড ব্যবস্থাপনায় যে দুটি বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এক. যদিও কভিড ওয়ার্ডগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। অনেক রোগী সুস্থ হওয়ার পরও অযথাই পড়ে থাকে তার টেস্ট নেগেটিভ হলো কি না সেটা দেখার জন্য। অনেক সময় চাপে বাধ্য হয়ে, অনেক সময় অবোধগম্য কারণে ডাক্তাররাও তাকে আবারও টেস্ট করতে পাঠান। শুধু একবার নয়, বারবার যতদিন টেস্ট নেগেটিভ না আসে। অথচ সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও নেগেটিভ আসতে ৪০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে কারও কারও। এই টেস্ট নেগেটিভ হওয়াটা ডিসচার্জ হওয়ার জন্য জরুরি নয়। বিশেষ করে যারা কেবিনে থাকে এবং রেফারেন্স থাকে তাদের কারও কারও সামনে টেস্ট নেগেটিভ হওয়ার আগেই বাসায় যান বলাটা অনেকটাই দুঃসাহসের পর্যায়ে চলে যায়। যিনি অনেক কষ্টে অনেককে ধরাধরি করে একটি সোনার হরিণ কেবিন/বেড ম্যানেজ করলেন তিনি সুস্থ হওয়ার পরও সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক একটা কারণে টেস্ট নেগেটিভ হলে তারপরে যাবে বলে বেড দখল করে বসে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে অনেক সিরিয়াস রোগী যার আসলেই ভর্তি ও অক্সিজেন দরকার তারা ফেরত যাচ্ছে।
কভিড রাউন্ডের সময় যতই বোঝাই পরবর্তী কভিড টেস্টগুলো একেবারেই অপ্রয়োজনীয়, সুস্থ হওয়ার পরেও টেস্ট পজিটিভ আসতে পারে, এ জন্য আপনার সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না, আপনি অন্য সবদিক দিয়ে বাড়ি যাওয়ার মতো অবস্থায় আছেন। তাছাড়া এই অপ্রয়োজনীয় টেস্টগুলোর কারণে যাদের আসলেই রোগ ডায়াগনোসিসের জন্য টেস্ট করার প্রয়োজন তারা বঞ্চিত হচ্ছে-তারা সেটা বুঝতে চায় না। লক্ষণ দেখা দেওয়ার দুই সপ্তাহ পরে সে অন্য কারও জন্য আর কোনো হুমকি নয়, সেটা বোঝালেও বুঝে না। দুঃখজনক ব্যাপার হলো গত এক বছর ধরে একইভাবে রোগীদের একটা বিরাট অংশ সবাই টেস্ট করে তারপর বাড়ি যাচ্ছে, এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। তারা একটা জায়গা দখল করে রাখছে। দূর থেকে মনে হবে রোগী, আসলে তার অনেক আগেই বাসায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল, শুধু গোঁ ধরে যে নেগেটিভ হওয়ার আগে সে যাবে না। কভিড টেস্ট পজিটিভ হলে রোগ সেরে যাওয়ার পরও দীর্ঘদিন (৪০ দিন পর্যন্ত) পরবর্তীতে টেস্ট পজিটিভ আসতে পারে। ভাইরাসের ভগ্নাংশের জন্য পরবর্তীতে পজিটিভ হয়, আসল ভাইরাসের জন্য নয়। তাই দ্বিতীয়বার বা বারবার কভিড টেস্ট করানোর কোনোই প্রয়োজন নেই। এই অযথা টেস্টের কারণে অনেকে প্রথমবারে টেস্ট করারও সুযোগ পায় না।
দুই. ভেন্টিলেটর নয়, কভিড রোগীদের জন্য আমাদের মূল মনোযোগ দেওয়া উচিত রোগীকে যাতে ভেন্টিলেটর পর্যন্ত যেতে না হয় সেদিকে। আমাদের দরকার অক্সিজেন, অক্সিজেন আর অক্সিজেন। অক্সিজেন কীভাবে আরও বেশি মাত্রায় দেওয়া যায় সেসব যন্ত্রপাতি। যেমন আরও আরও সেন্ট্রাল অক্সিজেন, High Flow nasal Cannula।ওয়ার্ডগুলো সয়লাব করে দিতে হবে Highflow Nasal Cannula (HFNC) দিয়ে। HFNC-এর অভাবে চাহিদা মাফিক পর্যাপ্ত অক্সিজেনের স্বল্পতায় কারও লিভার, কিডনি, ব্রেন নষ্ট হয়ে যেন আইসিইউতে কল পাঠাতে না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে আগে। এতে করে যে রোগীরা ICU-তে যাওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি করছেন তাদের বেশিরভাগই আসলে ওয়ার্ডেই ম্যানেজ হয়ে যাবে।
তারপরও কিছু রোগী থাকবে যাদের মাল্টি অর্গান ফেলিওর হবে, ভেন্টিলেটর লাগবে কিন্তু সংখ্যাটা যাবে অনেক কমে। এই HFNC, পাইপলাইনে অক্সিজেন-এসবের পিছনে অর্থ খরচের চেয়ে সর্বোত্তম খরচ এ মুহূর্তে আর কোনোটিতেই হতে পারে না। কভিড রোগীদের বেলায় Invasive ventilation তেমন জীবনরক্ষাকারী নয় আসলে। শতকরা হার এককের ঘরে, কখনো কখনো শূন্য।
When pt develops indications of invasive ventilaton that also almost indicates death ahead with or without this machine.
So prevention (HFNC in wards) is better than Cure (Ventilator in ICU).
তাই অবহেলা না করে এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে যথেষ্ট সচেতন, যত্নশীল ও আরো সতর্ক হতে হবে।
- ডা. আমিনুল ইসলাম, এফসিপিএস (মেডিসিন),
এমডি (চেস্ট), বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ