বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গর্ভকালীন কোমর ব্যথার কারণ

গর্ভধারণের শুরু থেকেই শরীরের কিছু হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। এর মধ্যে প্রজেস্টেরন এবং রিলাক্সিন হরমোন সন্তান জন্মদানের প্রস্তুতি হিসেবে কোমরের বিভিন্ন জয়েন্ট এবং লিগামেন্টকে নরম এবং ঢিলা করে দেয়। এর ফলে মায়ের শরীর অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। জয়েন্টের ভার বহন ক্ষমতা কমে যায় এবং হাঁটার সময়, বেশিক্ষণ বসে থাকলে, নিচে চেয়ার থেকে ওঠার সময় বা কোনো কিছু তোলার সময় ব্যথা অনুভূত হয়। গর্ভাবস্থায় জরায়ু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্তঃসত্ত্বার শরীরের ভরকেন্দ্রও পরিবর্তিত হয় এবং পেটের পেশিগুলো সম্প্রসারিত ও দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে মায়ের Posutre আক্রান্ত হয় এবং পিঠের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। যেহেতু মায়ের শরীর এ সময় অতিরিক্ত ওজন বহন করে তাই এ সময় মায়ের শরীরের পেশি এবং জয়েন্টগুলোর ওপর চাপ বেশি থাকে। এ কারণে গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা দেখা দিতে পারে। মেয়েদের পেলভিসে একজোড়া লিগামেন্ট থাকে যা রাউন্ড লিগামেন্ট নামে পরিচিত। এগুলোর কাজ হলো জরায়ুকে সঠিক স্থানে ধরে রাখা। গর্ভধারণের আগে এ লিগামেন্টগুলো পুরু এবং ছোট থাকে। গর্ভধারণের পড়ে জরায়ুর আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ লিগামেন্টগুলো রাবার ব্যান্ডের মতো প্রসারিত হয় এবং পাতলা হয়ে যায়। এ কারণে গর্ভাবস্থায় লিগামেন্টগুলো টান টান অবস্থায় থাকে এবং এতে হঠাৎ কোনো চাপ পড়লে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এ ধরনের ব্যথাকে রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন বলে। গর্ভবতী নারীরা যখন হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন করেন তখন সাধারণত রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন অনুভূত হতে পারে, যেমন- বিছানা বা চেয়ার থেকে ওঠার সময়। রাউন্ড লিগামেন্ট পেইনের কারণে শারীরিক ধকল গেলেও চাপা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কোমরে ব্যথা হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে সায়াটিক নার্ভের ওপর অতিরিক্ত চাপ। গর্ভাবস্থায় বড় হয়ে যাওয়া জরায়ুর চাপ যখন শরীরের দুটি সায়াটিক নার্ভের ওপর পড়ে তখন কোমরে, নিতম্বে বা উরুতে ব্যথা হতে পারে। এ ধরনের ব্যথাকে বলে সায়াটিকা। এ ধরনের ব্যথা সাধারণত কোমর বা কোমরের উপরে পিঠের মাঝ বরাবর হয়। তাই সচেতন হতে হবে।

ডা. এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হসপিটাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর