শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

নারীদের পিরিয়ডকালীন খাদ্যাভ্যাস

নারীদের পিরিয়ডকালীন খাদ্যাভ্যাস

পিরিয়ড অর্থাৎ মিন্সট্রুয়শন নারী জীবনের অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা। নানারকম হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এই সময়ে মেয়েদের বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন- ক্ষুধামন্দা, দুর্বল লাগা, মানসিক বিষাদ বোধগ্রস্ততা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা ইত্যাদি। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এই লক্ষণগুলোকে কমিয়ে আনা যায়। আবার খাদ্য তালিকায় কিছু কিছু খাবার এই লক্ষণগুলোকে বাড়িয়েও দেয়।

এই সময়ে প্রতিটি মেয়ের শরীরে দেখা দেয় আয়রনের ঘাটতি। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এই আয়রনের ঘাটতি পূরণ একান্ত বাঞ্ছনীয়। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে সবুজ শাকসবজি, শুকনো ফল, মাছ, মাংস, ডিম, লাল চালের ভাত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও খাদ্য তালিকায় আয়রন ফোর্টিফাইড খাবার যুক্ত করা যেতে পারে। আয়রন এর পাশাপাশি এই সময়ে প্রোটিনের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। আয়রন শরীরে সঠিকভাবে শোষণ করার জন্য প্রয়োজন ভিটামিন-সি। লেবু, লেবু জাতীয় ফল, পেয়ারা, টমেটো, অঙ্কুরিত ছোলা, আমলকী ইত্যাদিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। এছাড়াও আয়রন শোষণের জন্য এই সময়ে চা, কফির পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। চায়ের ট্যানিন এবং কফির ক্যাফেইন পেটে ব্যথা, মাথা ব্যথা ও অস্থিরতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও খাদ্য তালিকায় থাকতে হবে ক্যালোরিসমৃদ্ধ খাবার, যা আমাদেরকে দ্রুত শক্তি দেবে। যেমন- বিভিন্ন রকমের বাদাম। ভিটামিন বি১২ ও আমাদের রেড ব্লাড সেল তৈরিতে সহায়তা করে। যা আমরা কলিজা, মাংস, ডিম, দুধ থেকে সহজেই পেতে পারি। এসময়ে এড়িয়ে চলতে হবে প্রসেসড খাবার অর্থাৎ প্রক্রিয়াজাত খাবার। যাতে রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে সোডিয়াম, তেল এবং অতিরিক্ত চিনি যা বমি বমি ভাব বৃদ্ধি করে দেয়। অবশ্যই নজরে রাখতে হবে খাদ্য তালিকাতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড (সামুদ্রিক মাছ, বাদাম) থাকতে হবে। ডিহাইড্রেশনজনিত মাথাব্যথা এই সময়ে খুব কমন একটি লক্ষণ। প্রতিকারে রাখতে হবে যথেষ্ট পরিমাণ পানি ও পানিজাতীয় খাবার। এসময়ে আদা পানি বা আদাযুক্ত হালকা রং চা ইনফ্লামেশন কমাতে এমনকি অতিরিক্ত পেটে ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। অনেকেরই সিস্টজনিত ইনফেকশন হয়ে থাকে। টকদই এর একটি ভালো প্রতিকার।

সবশেষে এই সময়ে একটু হালকা ব্যায়াম করতে হবে যা আমাদের হ্যাপি হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে। যা শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি দেবে। তাই এ বিষয়ে আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে।

-চৌধুরী তাসনিম হাসিন, চিফ ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান অ্যান্ড এইচওডি, ডায়েটিকস অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগ, ইউনাইটেড হসপিটাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর