শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ডায়াবেটিস রোগীদের পাইলস

ডায়াবেটিস রোগীদের পাইলস

ডায়াবেটিসের হাত থেকে ছোট-বড় কারোরই রক্ষা নেই। এর অন্যতম প্রধান কারণ আমাদের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন। অপরদিকে ‘পায়ুপথের বিভিন্ন সমস্যাও প্রকট আকারে দেখা দিচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ুপথের সমস্যা হলে সেটি কি যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের মতো হবে নাকি অন্যরকম হবে। প্রথমেই বলে রাখা ভালো- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের অন্য রোগীদের মতো পায়ুপথের সব রোগ যেমন পাইলস, ফিস্টুলা, এনালফিসার, রেকটাল পলিপ, ক্যান্সারসহ সব রোগেই হয়। বরং কোনো কোনো রোগ তাদের সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি হয়। কিন্তু যে বিষয়টি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ুপথের এসব রোগ হলে তার জটিলতার হার অনেক বেশি। প্রশ্ন করতে পারেন ডায়াবেটিস রোগীদের জটিলতা বেশি হয় কেন? ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে দীর্ঘদিন চিনি বেশি থাকার কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধী যেসব কণিকা যেমন স্বেত কণিকা থাকে। তাদের কর্মক্ষমতা কমে যায়, ফলে রোগজীবাণু আক্রমণ করলে সহজে প্রতিরোধ করতে পারে না। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তনালি শুকিয়ে যায়, ফলে কোনো স্থানে ক্ষত ইত্যাদি হলে রক্তকণিকা এসে সেই ক্ষত দূর করতে অসুবিধা হয়। অপরদিকে ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের নার্ভ বা স্নায়ুগুলোও শুকিয়ে যায়। ফলে রোগী কোনো কোনো স্থানে অসুবিধা হলে সাধারণ মানুষ যে ব্যথা বুঝতে পারে, সে ব্যথা বুঝতে পারে না। ফলে কোনো জটিল রোগ হলে বা রোগের জটিলতা সৃষ্টি হলে রোগী বুঝতে পারে না, যার ফলে রোগ অনেক সময় অত্যন্ত জটিল হয়ে যায়। পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ যেমন পাইলস, ফিস্টুলা, এনালফিসার ইত্যাদি রোগ যখন ডায়াবেটিস রোগীদের হয় তখন বিশেষ জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। মলদ্বারে অনেক জীবাণু থাকে, বস্তুতপক্ষে মলদ্বারকে জীবাণুর গোডাউন বলা যেতে পারে। পাইলস, ফিস্টুলা ইত্যাদি যখন জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়, ডায়াবেটিস রোগীদের সে ইনফেকশন সহজে ভালো হতে চায় না। একই কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের অপারেশনেও অনেক জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। সবার মনে রাখা উচিত, ডায়াবেটিস রোগীর পায়ুপথের কোনো সমস্যা হলে সেটাকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। তাহলে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি অনিবার্য। প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগের চিকিৎসা নেওয়া উত্তম। অন্যথায় জটিলতা বাড়ে। তাই সচেতন হোন। এ ছাড়া এ সময় আরও একটি বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। সম্প্রতি উদযাপিত হলো ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। ঈদ পরবর্তী এ সময় বাসাবাড়িতে এমনিতেই গরু বা খাশির মাংস একটু বেশিই খাওয়া হচ্ছে। কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সে বিষয়েও একটু যত্নবান ও সচেতন হতে হবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য।

-অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান,

কোলোরেক্টাল সার্জন, পপুলার ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, শ্যামলী, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর