বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

চোখে আঘাত পেলে

চোখে আঘাত  পেলে

চোখ খুব সংবেদনশীল ও নরম একটি অঙ্গ। বাইরের আঘাত থেকে নিরাপদ রাখার জন্য শক্ত হাড়নির্মিত চক্ষুকোটরে এর অবস্থান। কিন্তু দেখার জন্য সামনের দিকটি খোলা। আর এটিই চোখকে আঘাতপ্রবণ করে রেখেছে; যদিও চোখের পাতা এটিকে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টায় থাকে।

সতর্কতা : নানাভাবে চোখে আঘাত লাগতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় খেলাধুলার সামগ্রী, যেমন- ব্যাডমিন্টনের কর্ক লেগে, ওয়েল্ডিং বা গ্রিন্ডিং মেশিনে কাজ করার সময় পাথর বা লোহার কণা ছিটকে এসে; পড়াশোনার সামগ্রী, যেমন পেনসিল, স্কেল, কম্পাস ইত্যাদির আঘাতে ও দুর্ঘটনায়। ধরন বিবেচনায় চোখের আঘাতকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। ব্লান্ট ট্রমা বা ভোঁতা কোনো বস্তুর আঘাত এবং পেনিট্রেটিং বা ধারালো বস্তুর আঘাত। অন্যভাবেও চোখের আঘাতকে বর্ণনা করা যায়। যেমন চোখের আবরণ ভেদ করা আঘাত বা পেনিট্রেটিং ইনজুরি এবং চোখের আবরণ ক্ষত বা ব্লান্ট ইনজুরি।

পেনিট্রেটিং ইনজুরিতে চোখের ভিতরের বস্তু যেমন খুব সহজে বাইরে চলে আসতে পারে, তেমনি চোখের বাইরে থেকেও বস্তু বা ইনফেকশন চোখের ভিতরে ঢুকে যেতে পারে। সঙ্গে চোখের ভিতর রক্তক্ষরণ ঘটতে পারে। চোখের ভিতর কোনো বস্তু ঢুকলে অর্থাৎ ইন্ট্রা অকুলার ফরেন বডি থাকলে, এটি চোখের ভিতর রক্তক্ষরণ ও ইনফেকশনের ঝুঁঁকি বাড়িয়ে দেয়। রক্তক্ষরণ ও ইনফেকশন অন্ধত্বের ঝুঁঁকি তৈরি করে।

করণীয় : চোখের আঘাত পেনিট্রেটিং ইনজুরি কিনা, ভিতরে রক্তক্ষরণ, কোনো বস্তুর অবস্থান, চোখের কনটেন্ট বের হয়ে এসেছে কিনা, ইনফেকশনের ঝুঁঁকি ইত্যাদি নির্ণয় করার জন্য আলট্রাসনোগ্রাম, সিটি স্ক্যান, এক্স-রের সাহায্য নিতে হয়। যে কোনো আঘাতের পর প্রথম কাজ হলো দ্রুত সময়ে ইনজুরি রিপেয়ার করা এবং ইনফেকশন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া। যদি চোখের ভিতর কোনো বস্তু থেকে যায়, তবে সেটি বের করে নিয়ে আসা। চোখে আঘাত পেলে কোনো কিছু দিয়ে ধোয়ার চেষ্টা বা পরিষ্কারের চেষ্টা না করাই ভালো। কোনো ফার্মেসি থেকে একটি স্টেরাইল গজ দিয়ে চোখ ঢেকে দ্রুত নিকটস্থ চক্ষু হাসপাতালে নিতে হবে। ইনফেকশন প্রতিরোধে মুখে বা ইনজেকশনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যেতে পারে। তবে চোখে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ দেওয়া যাবে না, বিশেষ করে যদি আবরণ ভেদ করা আঘাত মনে হয়। চোখের আঘাতে কয়েক ধাপে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। চিকিৎসা যেমন একাধিক ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে, তেমনি একাধিক সার্জন বা সেন্টারে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। তাই চোখের আঘাত নিয়ে কোনো অবস্থাতেই অবহেলা করা ঠিক নয়। এ বিষয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।

- ডা. মো. ছায়েদুল হক, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার, আদাবর, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর