রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

ক্যান্সার প্রতিরোধে কিছু পরামর্শ

ক্যান্সার প্রতিরোধে কিছু পরামর্শ

ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে বিস্তার ঘটিয়ে তা দেহের চারপাশের টিস্যু, এমনকি দূরবর্তী কোনো অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরিণতিতে আক্রান্ত ব্যক্তি একপর্যায়ে মৃত্যুবরণ করে। ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি বলেই মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বছরের বিভিন্ন সময় নানা ধরনের দিবস পালিত হয়ে আসছে। আমাদের দেশে স্তন, জরায়ু, অন্ত্রনালি, প্রোস্টেট, ফুসফুস, পাকস্থলী, ডিম্বাশয়, যকৃত, খাদ্যনালি, মুখগহ্বর, ত্বক ইত্যাদি অঙ্গের ক্যান্সার প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়। ক্যান্সারের কারণ হিসেবে পান-সুপারি, জর্দা, তামাকপাতা, ধূমপান, মদ্যপান, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ, কিছু কিছু ভাইরাস (হেপাটাইটিস বি ও সি, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস HPV), এইচআইভি, ইবিস্টেইন বার ভাইরাস, সাইটোমেগালা ভাইরাস), কিছু পরজীবী (সিস্টোসোমিয়াসিস), সূর্যকিরণ, তেজষ্ক্রিয়তা ইত্যাদিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ক্যান্সার প্রতিরোধ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চললে সবার জন্য উত্তম। ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, বিশেষ করে নারীদের ঋতুস্রাব এবং সন্তান জন্মের পরে পরিচ্ছন্নতা বিশেষ প্রয়োজন। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম করে শরীর সচল রাখা খুব জরুরি। সব ধরনের তেজষ্ক্রিয়তা এড়িয়ে চলা ভালো। পেশাগত কারণে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা থাকলে প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিয়ে কাজ করতে হবে। সময়মতো টিকা গ্রহণ করা জরুরি। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বর্জন করতে হবে।

সর্বোপরি খাদ্য, ওষুধ ও কসমেটিক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কোনো অবস্থাতেই ভেজাল বা নিম্নমানের ব্যবহার করা যাবে না এগুলো। পর্যাপ্ত উদ্ভিজ খাবার (শাকসবজি, ফলমূল) ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। খাবারে অতিরিক্ত লবণ বর্জন করুন। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বা এড়িয়ে চলুন। যেসব অসুখ থেকে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেগুলোর দ্রুত চিকিৎসা করানো উত্তম। দ্রুত ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে এ ঘাতকব্যাধি নির্মূল করা সম্ভব। লক্ষণ অনুভূত হলে শুরুতেই  চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

যেভাবে প্রতিরোধ করবেন :

খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, যেমন- টাটকা ফলমূল, প্রক্রিয়াজাত খাবার না খাওয়া। ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার, এন্ডোসকপিক স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে গেলে ভালো থাকা যায়।

-অধ্যাপক ডা. সেতাবুর রহমান

বিভাগীয় প্রধান, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার, গ্রিন রোড, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর