মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাতে শিশুদের মাথা ঘামলে...

রাতে শিশুদের মাথা ঘামলে...

শিশুদের মাথা ঘামা নিয়ে যেন বাবা-মার দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সাধারণত শিশুর এই আচরণকে অসুখ-বিসুখ ভাবা ঠিক নয়। রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় মাথা ঘেমে যাওয়া, হাতের পাতা ঘেমে জব জবে হওয়া শিশুদের বেলায় প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। শিশুর মাথা ঘেমে গেলে মাথায় সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ না থাকলে এই নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। শারীরিক কার্যকলাপের সময় উষ্ণ পরিবেশে, মাথায় ঘাম একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। শিশুদের ঘামের গ্রন্থিগুলো শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো মাথার ঘামের গ্রন্থিও অপরিপক্ব, যার কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামে মাথা। শিশুদের মাথা ঘামার সুবিধা হলো শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন হয়। মাথায় প্রচুর ঘাম গ্রন্থি থাকে এবং এই ঘাম শরীরকে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে।

কেন শিশুদের মাথা ঘামে : ১.জন্মগত হৃদরোগের কারণে শিশুর মাথা অতিরিক্ত ঘামতে পারে। তবে এক্ষেত্রে শিশুর অন্যান্য লক্ষণ থাকে যেমন হাত-পা, ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়া, ঘন ঘন নিউমোনিয়া হওয়া, শরীরের ওজন বৃদ্ধি না পাওয়া ইত্যাদি।

২.থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত হরমোন তৈরির কারণে শিশুর মাথার ঘাম বৃদ্ধি পেতে পারে। এক্ষেত্রে শিশুর ঘাম বৃদ্ধির সাথে ওজন কমে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করা, ঘুম কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা থাকে।

৩. শিশুর রিকেটস রোগের জন্য ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর অভাব হলে ঘাম বেড়ে যেতে পারে।

৪. ইডিওপ্যাথিক হাইপারহাইড্রোসিস নামক রোগের কারণে শিশুর অতিরিক্ত ঘাম বেড়ে যেতে পারে।

৫. কিছু কিছু ওষুধ যেমন এমফেটামিন, পেথিডিন, থাইরোক্সিন অতিমাত্রায় এই ওষুধগুলো মা খেলে বুকের দুধ খায় এমন শিশুর মাথা ঘেমে যেতে পারে।

৬.ক্যাফেইনযুক্ত খাবার মাথার ঘাম বাড়িয়ে দিতে পারে। ৭.অতিরিক্ত মোটা কাপড় ও শিশুর মাথার ঘাম বাড়িয়ে দিতে পারে।

কখন চিকিৎসক দেখাবেন : শিশুর ঘামের সঙ্গে যদি অন্যান্য কিছু লক্ষণ দেখা যায়, তবে চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, যেমন : ১. বয়স অনুযায়ী ওজন এবং উচ্চতা বৃদ্ধি না পাওয়া। ২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম সত্ত্বেও শিশুর ক্লান্তি দূর না হওয়া। ৩. শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা শ্বাস নিতে অসুবিধা বা ঘন ঘন শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া। ৪. হাত, পা, ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়া।

৫.কবজি ফুলে যাওয়া, দেরিতে হাটতে শেখা। হাঁটু থেকে গোড়ালি পর্যন্ত সামনের দিকে অথবা হাঁটুর কাছ থেকে দুই পা দুই দিকে বেঁকে যাওয়া। কারণগুলো বোঝা এবং কখন চিকিৎসা নেওয়া উচিত তা জানা অভিভাবকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ বিষয়ে আরও সচেতন ও যত্নবান হতে হবে।

-অধ্যাপক ডা. ইমনুল ইসলাম ইমন, শিশু বিভাগ, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর-৬ ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর