বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বৈদেশিক লেনদেনে নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে

দেওয়ান নাজমুল হাসান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ট্যাপ

বৈদেশিক লেনদেনে নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনি জানেন আমাদের দেশে ক্যাশলেস লেনদেন এখন বেশ জনপ্রিয়। এটা গত ৫/১০ বছরে যতটা বেড়েছে তাতে কি আপনার মনে হয় আমরা ডিজিটাল জাতি গঠনের কার্যক্রমে সঠিক পথে এগোচ্ছি?

দেওয়ান নাজমুল হাসান : এক কথায় বলতে গেলে নিঃসন্দেহে। ডিজিটাল সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ডিজিটাল বা ক্যাশলেস লেনদেন। আর এ ক্ষেত্রে গত ৫-১০ বছরে একটা বিপ্লব ঘটে গেছে। অর্থ লেনদেন যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এসেছেন একটি আনুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থার আওতায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অগ্রযাত্রায় এ এক অনন্য মাইলফলক।

 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : ডিজিটাল লেনদেনে তো ঝুঁকিও বেশি। এই ঝুঁকির সঙ্গে আমাদের আর্থিক খাত কতটা সঙ্গতিপূর্ণ বলে আপনার মনে হয়?

দেওয়ান নাজমুল হাসান : ডিজিটাল লেনদেনে ঝুঁকি বেশি, কথাটা ঠিক নয়। এখানে লেনদেন বরং প্রথাগত লেনদেনের চেয়ে সুরক্ষিত। তবে হ্যাঁ, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে অনেক সময় দুষ্কৃতকারীরা আর্থিক নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, তবে তা সংখ্যায় বেশি নয়। এই সীমাবদ্ধতা দূরীকরণে সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরাও ডিজিটাল নিরাপত্তার দিকে জোর দিয়েছি। আমরা আশাবাদী এই পদক্ষেপ ডিজিটাল লেনদেনের ঝুঁকি দূর করবে। 

বাংলাদেশ প্রতিদিন :  বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমরা এখনো অনেক বেশি ক্যাশ ব্যবহার করি। এটা কীভাবে কমানো যায় বলে আপনার ধারণা?

দেওয়ান নাজমুল হাসান : একটি প্রথাগত অভ্যাস থেকে নতুন কোনো অভ্যাস আয়ত্ত করতে স্বভাবতই কিছুটা সময় নেয়। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী  বাংলাদেশের ৪৮ শতাংশ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। এই সংখ্যা যত বাড়বে ডিজিটাল লেনদেনের সংখ্যাও তত বাড়বে। তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, এর সহজলভ্যতা। রাজধানীর বড় বড় করপোরেট আউটলেটগুলো ছাড়া সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কিন্তু ডিজিটাল পেমেন্টের সুযোগ নেই। এমনকি বিভাগীয় শহরগুলোতেও ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ সীমিত। তাই রিকশা ভাড়া থেকে শুরু করে মুদি দোকানের মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা যখন ডিজিটাল লেনদেনের আওয়ায় আসবে তখন স্বাভাবিকভাবেই এর পরিধি বাড়বে। ট্যাপ সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।

 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : কার্ড জালিয়াতি কিংবা ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে সরকারের আরও কী করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

দেওয়ান নাজমুল হাসান : কেউ যেন তাদের ডিজিটাল অ্যাকাউন্টের তথ্য ও পিন কাউকে না বলেন- এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে জোর প্রচারণা প্রয়োজন। ডিজিটাল জালিয়াতির ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। তবে ডিজিটাল জালিয়াতি রোধে ট্যাপ ইতোমধ্যে দুই স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করেছে।

 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : অভিযোগ রয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং-এর আড়ালে দেশ থেকে অর্থ পাচার হচ্ছে আবার বিদেশ থেকেও একই পথে অবৈধভবে অর্থ আসছে। এ প্রসঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতা বণর্না করুন-

দেওয়ান নাজমুল হাসান : এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নীতিমালা ও দৃঢ় অবস্থানের কারণে এমন কোনো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আমাদের হতে হয়নি। বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি গ্রাহকবান্ধব ও নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনি জানেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী তাদের উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছেন মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতাগুলো দেওয়া হচ্ছে একইভাবে। এতে জীবন কতটা সহজ হয়েছে আর অনিয়ম কমেছে কি না- আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

দেওয়ান নাজমুল হাসান : নিশ্চিতভাবে এতে জীবনযাত্রা সহজ হয়েছে। আগে উপবৃত্তি বা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতাগুলো উত্তোলন করতে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে বহু ঝক্কি নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে তা তুলতে হতো। এখন মানুষ ঘরে বসেই তা পেয়ে যাচ্ছেন। এতে স্বাচ্ছ্যন্দের পাশাপাশি অনিয়মের সুযোগও আর নেই। কারণ উপকারভোগীর অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট সময়ে অর্থ পৌঁছে যাচ্ছে যা সহজেই পাশের কোনো এমএফএস সেবাদাতার কাছ থেকে উত্তোলন করা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর