তিন দশকেও কাক্সিক্ষত শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠেনি ভোলার বিসিক শিল্প নগরীতে। জ্বালানি সংকটসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার অভাবে বিসিকের ৪৮টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে মাত্র ১৭টি শিল্প ইউনিটে কার্যক্রম চলছে। বাকিগুলো খালি পড়ে আছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় অনেকেই কারখানা চালু করতে পারছেন না। গ্যাস সংযোগ পেলে এখানে দ্রুত শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে বলে মনে করছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। এদিকে গ্যাস সংযোগ পাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিসিক কর্তৃপক্ষ।
উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা সংকটের কারণে স্থবির হয়ে পড়ে আছে বিসিক নগরী। তবে গত এক দশক আগে যখন ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসফিল্ড থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয় তখন এই শিল্পনগরীতে গ্যাস সংযোগ পাবেন এমন আশায় অনেক উদ্যোক্তা প্লট বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১০ বছরেও গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া বিসিকের শেষ প্রান্তে অবস্থিত খালপাড়ের জেটি ব্যবহার করে খাদ্যগুদামের পণ্য উঠানো নামানো হচ্ছে। ফলে বিসিকের ভিতরের রাস্তায় খাদ্যগুদামের ভারী ভারী ট্রাক যাতায়াত করায় এর অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট ভেঙে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে এখানে প্লাস্টিকের কনটেইনার ও প্লট তৈরি, বিস্কুট, চানাচুর এবং আইসক্রিম তৈরির কারখানা রয়েছে। রয়েছে চাল ও ময়দার মিল। অথচ বিসিকের ৯৩টি প্লটের মধ্যে ৮৬ টি প্লট শিল্প-কারখানার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যারা এসব প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন তাদের অনেকেই প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা না থাকায় কারখানা প্রতিষ্ঠা করেননি। দু-একজন কারখানা করে লোকসানের কারণে বন্ধ করে দিয়েছেন। কেউ কেউ কারখানা তৈরি করেও গ্যাসের সংযোগ না পাওয়ায় চালু করতে পারছেন না। যারা নতুন এসেছেন তারাও শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে শিল্প সম্ভাবনাময় জেলায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, ভোলা বিসিক শিল্পনগরীতে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭টি শিল্প-প্রতিষ্ঠান চালু আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা একদিকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অন্যদিকে বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
গ্যাস সংযোগকে ভোলা বিসিকের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মো. সোহাগ হোসেন জানান, জেলায় পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ থাকলেও এখনো গ্যাস সংযোগ পায়নি বিসিকের উদ্যোক্তারা। গ্যাস সংযোগ পাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।