খেত থেকে তোলা টমেটো স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এরপর তা চলে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চিত্র এখন এমন। এক বিঘা টমেটো চাষ করতে হাসিবুল ইসলাম খরচ করেছেন ১০ হাজার টাকা। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে টমেটো উঠছে তার জমি থেকে। এর মধ্যেই হাসিবুলের হাতে এসেছে ৩০ হাজার টাকা। বাজার ভালো থাকলে আরও ২০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সোনাদীঘি গ্রামের এই টমেটো চাষি।
হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘গতবার টমেটো করে লাভ হয়েছিল। এবারও ভালো লাভ হচ্ছে। অন্য ফসলের তুলনায় টমেটোতেই লাভ বেশি।
কৃষি বিভাগের হিসাবে, প্রায় দুই দশক আগে গোদাগাড়ীতে শীতকালীন হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ শুরু হয়। এবার শীত মৌসুমে রাজশাহীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। এর প্রায় সবটাই চাষ হয়েছে গোদাগাড়ীতে।বসন্তপুর গ্রামের চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এবার টমেটোর দাম খুব ভালো। এক সপ্তাহ পরপর জমি থেকে টমেটো তোলা যায়। নভেম্বরের শুরু থেকেই টমেটো উঠছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত ফলন হবে। কৃষকের খরচের টাকা প্রথম দুই চালানেই উঠে গেছে। এখন যে রকম দাম পাওয়া যাচ্ছে, বাকি সময়টাও পাওয়া গেলে কৃষকের লাভ ভালো হবে।’
কৃষক লাভ করলেও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন শরীয়তপুর থেকে আসা ব্যাপারী জুগার মাতব্বর। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে কৃষককে মণপ্রতি কাঁচা টমেটোর দাম দেওয়া হয়েছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। সেই টমেটো সাত দিন রেখে পাকিয়ে মোকামে নিয়ে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে। এতে সব ব্যাপারীর ক্ষতি হয়েছে।’
জুগার বলেন, প্রতি বছরই যখন প্রথম টমেটো ওঠে, তখন দাম একটু বেশি থাকে। এবারও বেশি দাম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার ব্যাপারীদের ক্ষতি হয়েছে ভারত থেকে টমেটো আমদানির কারণে।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোজদার হোসেনের মতেও এবার চাষিদের ভালো লাভ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গোদাগাড়ীর মাটি শীতকালীন টমেটো চাষের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এ কারণে শীতকালে এখানে প্রচুর টমেটো হয়। কম-বেশি প্রতি সবছরই চাষিরা লাভ করে থাকেন। এবার শুরু থেকে ভালো দাম থাকায় লাভও হচ্ছে।’