পদ্মা ও কালনা সেতুর সুফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিনই ভারতে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে এমনটা মনে করছেন বেনাপোল কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বন্দর ব্যবহারকারীরা।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভারতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার মে. টন পণ্য। গত বছর একই সময়ে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৯২ হাজার টন। যার রপ্তানি মূল্য ৩ হাজার কোটি টাকা। যা গতবারের তুলনায় প্রায় ১ হাজার ১৫২ কোটি টাকা মূল্যমানের বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা মূল্যের ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৫ মেট্রিক টন বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে। যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ বন্দরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ মেট্রিক টন। সে তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে এসে রপ্তানি বেড়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৪৪ মেট্রিক টন। পণ্য পরিবহন সহজতর হওয়ায় বেনাপোল বন্দর পথে প্রতি বছর রপ্তানি বাড়ছে।
প্রথম ছয় মাসে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি গত বছরের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। শুল্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পণ্য রপ্তানির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে এ বছর দ্বিগুণ পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে।বাংলাদেশি পণ্যের মান ভালো হওয়ায় ভারতে এর কদর বেড়েছে উল্লেখ করে রপ্তানিকারক তৌহিদুর রহমান বলেন, এ যাবৎকালে ভারতে সবচেয়ে বেশি পণ্য গেল অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানি বাড়ায় দেশে মানুষের কর্মসংস্থানও বেড়েছে।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে বাণিজ্য সম্পাদনে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দ্রুত নিরসনের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ভারতে পণ্য রপ্তানি আরও বাড়াতে পারলে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে সমতা ফিরে আসবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রেলযোগে ভারতে পণ্য রপ্তানি করা হলে দ্রুততম সময়ে পণ্য রপ্তানি করা এবং পরিবহন ব্যয় কমে আসার বিষয়ে বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, প্রতিদিন রেলযোগে ভারত থেকে পণ্য আসছে। পরে বন্দরে পণ্য খালাস করে খালি বগি নিয়ে কলকাতায় ফেরত যায়। যদি রেলযোগে রপ্তানি পণ্য পরিবহন করা যায় তবে বাণিজ্য সহজ ও খরচ কমে আসবে।
সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বন্দরে কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়ে বেনাপোল বন্দরের উপ-উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে করোনা সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বন্দর চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। এতে সরকারি ছুটির দিনেও বন্দর খোলা রেখে কাজ করছে কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এতে দেড় লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি পরিমাণ পণ্য ভারতে রপ্তানি সম্ভব হয়েছে।