বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মাঝেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়ছে। আমদানি ব্যয় পরিশোধ বেড়ে গেলেও রেকর্ড রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকগুলোর ডলার মজুতে ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ছিল ৪২৬ কোটি মার্কিন ডলার। জানুয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫৪ কোটি ডলারে, ফেব্রুয়ারিতে ৪৬৩ কোটি এবং মার্চে সর্বশেষ তা দাঁড়িয়েছে ৫১১ কোটি ডলারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, স্থিতিশীল বিনিময় হারের ফলে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, যার প্রভাব ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার আয়ে পড়েছে। মার্চ মাসে প্রবাসীরা দেশে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ এবং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জুলাই-মার্চ সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৭৮ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে দেশের রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭১৯ কোটি ডলার। এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এমটিবি) পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘রেমিট্যান্সের প্রবাহ যেমন বেড়েছে, তেমনি রপ্তানি আয়ের দিক থেকেও আমরা ভালো করছি। পাশাপাশি বায়ার্স ক্রেডিটের মাধ্যমে বিদেশি তহবিলও আসছে, যার ফলে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়ছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে আমদানি বিল পরিশোধের পরিমাণ ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫৯৯ কোটি ডলার। এ সময় নতুন এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭২৮ কোটি ডলারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুন্ডি ও বাণিজ্যভিত্তিক মানি লন্ডারিং কমে যাওয়াও বৈদেশিক মুদ্রা সংকট কিছুটা প্রশমনে সহায়ক হয়েছে।