৩ আগস্ট, ২০২১ ১১:২৯

পেগাসাস কাণ্ড: ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ফাঁস হওয়া নিয়ে যা বললেন সৌদি নারী সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক

পেগাসাস কাণ্ড: ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ফাঁস হওয়া নিয়ে যা বললেন সৌদি নারী সাংবাদিক

ঘাদা ওয়েসিস

ঘটনাটা গত বছরের। জুনের কোনও এক রাতে স্বামীর সঙ্গে খেতে বসেছিলেন ঘাদা ওয়েসিস। আদতে লেবাননের বাসিন্দা ওই তরুণী সৌদি আরবের একটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের নারী সাংবাদিক। এক সহকর্মী ফোন করে তাকে তখনই টুইটার দেখতে বলেন। চমকে ওঠেন ঘাদা। তার ফোনে তোলা কিছু ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস হয়ে গিয়েছে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে। ছবি তো হু হু করে শেয়ার হয়েছেই, সেই সঙ্গে তার চরিত্র নিয়ে যাবতীয় কুরুচিকর মন্তব্যও।

পশ্চিমী দুনিয়ায় মেয়েদের খোলামেলা ছবি শেয়ার হওয়া খুব স্বাভাবিক নজরে দেখা হলেও সৌদি আরবের মতো অতিরক্ষণশীল কোনও দেশের নারীর ছবি এভাবে ছড়িয়ে পড়ায় তীব্র আক্রমণের মুখে পড়তে হয় ঘাদাকে। তার কথায়, ‘‘আমি একজন স্বাধীন, উদারপন্থী মানুষ। তাই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ আমায় আক্রমণ করতে দু’বার ভাবে না। আমার লেখা নিয়ে সমালোচনা হয়, সেটা এক কথা। কিন্তু এভাবে আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি শেয়ার হয়ে যাওয়ায় আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল যে কেউ চাইলে আমার শোওয়ার ঘর বা শৌচাগারে ঢুকে পড়তে পারে!’’

যে ছবি একমাত্র তার ফোনে ছিল, কখনও কোনও সামাজিক মাধ্যমে তিনি সেই ছবি শেয়ারই করেননি, সেই ছবি গোটা দুনিয়া কী করে দেখে ফেলল, তা ভেবে প্রথমে বিস্মিত হয়েছিলেন ঘাদা। পরে বুঝতে পারেন হ্যাক করা হয়েছে তার মোবাইল ফোন। আরও পরে জানতে পারেন, আরও অনেক সাংবাদিকের মতোই তার ফোনেও আড়িপাতা হয়েছে পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে।

ঘাদা অবশ্য একা নন। সরকার বা প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করা মধ্য এশিয়ার একাধিক নারী সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মীকেই এই ধরনের হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে গত কয়েক বছরে। তারা তখন প্রতিবাদ করলেও কেউ শোনেননি তাদের কথা। উল্টো ঘাদার মতো একনিষ্ঠ সাংবাদিককে যৌনকর্মী বলতেও পিছপা হয়নি তার দেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। এখন ইসরায়েলি সংস্থার তৈরি এই স্পাইওয়্যারের কথা জানাজানি হওয়ার পরে মন খুলে কথা বলার সাহস পাচ্ছেন ঘাদার মতো নারীরা।

বরাবরই সৌদি সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন ঘাদা। তার ধারণা, সেই জন্যই সৌদি সরকারের বিরাগভাজন হন তিনি। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চায়নি। তবে আমেরিকার ফ্লোরিডার এক আদালতে সৌদি যুবরাজ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসক মুহাম্মদ বিন জায়েদ ও ফ্লোরিডার দুই টুইটার ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরেই মামলা করেছিলেন ঘাদা। অভিযোগ, তার ফোনে আড়ি পেতে তাকে হেনস্থা করা হয়েছে। আমেরিকার ডিজিটাল ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাদার ফোনে পেগাসাস ব্যবহার হয়েছিল।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর