২২ জানুয়ারি, ২০২২ ১১:১৩

টেক্সাস সিনাগগ জিম্মির ঘটনা প্রমাণ করে সন্ত্রাসের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তান, দাবি মাইকেল রুবিনের

অনলাইন ডেস্ক

টেক্সাস সিনাগগ জিম্মির ঘটনা প্রমাণ করে সন্ত্রাসের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তান, দাবি মাইকেল রুবিনের

টেক্সাস সিনাগগ জিম্মির ঘটনা প্রমাণ করে সন্ত্রাসের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তান

টেক্সাস সিনাগগ জিম্মির ঘটনা প্রমাণ করে সন্ত্রাসের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তান, দাবি মাইকেল রুবিনের

সম্প্রতি আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের কলিভিল শহরের একটি সিনাগগে (ইহুদি উপাসনালয়) জিম্মি ঘটনায় ঘটায় এক বন্দুকধারী।  তার নাম মোহাম্মদ সিদ্দিকী। তিনি একজন পাকিস্তানি। তিনি ওই সিনাগগের যাজকসহ চার ব্যক্তিকে জিম্মি করা হয়।

এই ঘটনা প্রমাণ করে পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতা করে- এমনটি দাবি করেছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক মাইকেল রুবিন।

জানা গেছে, বন্দুকধারী ওই জিম্মিকারী পাকিস্তানি স্নায়ুরোগবিশারদ আফিয়া সিদ্দিকীর ভাই। তিনি তার বোনের মুক্তির জন্যই এই জিম্মির ঘটনা ঘটান। আফিয়া আমেরিকায় ৮৬ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। আফগানিস্তানে বন্দি থাকার সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যাচেষ্টার দায়ে তাকে এই সাজা দেওয়া হয়।

তবে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা জিম্মিকারীর সঙ্গে আলোচনা ও নানা তৎপরতার পর জিম্মিদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে মার্কিন পুলিশ। এ সময় জিম্মিকারীকে নিহত অবস্থায় পাওয়া যায়।

ঘটনার অবসানের আগে বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। উদ্ধারকারী দল সিনাগগের ভেতরে ঢুকতে সক্ষম হন। ঘটনাটি ঘটে টেক্সাসের কংগিগ্রেশন বেথ ইসরায়েল নামের সিনাগগে। ফেসবুকে চলা স্ট্রিমিংয়ের অডিওতে এক ব্যক্তিকে চেঁচিয়ে বলতে শোনা যায়, “আমার বোনকে ফোন দিন। আমি মরতে চলেছি।”

লোকটি আরও বলে, “আমেরিকার কোনও একটা সমস্যা হয়েছে।” এর কিছুক্ষণ পরেই আশপাশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

ভিক্টোরিয়া ফ্রান্সিস নামে এক নারী বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছিলেন, তিনি লাইভ স্ট্রিমের সময় ওই ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে শোনেন। লোকটি আরও বলছিল তার কাছে বোমা আছে। 

নেপথ্যে আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি

গত ১২ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে কারাভোগ করছেন পাকিস্তানি বিজ্ঞানী আফিয়া সিদ্দিকী। আল কায়েদার অপারেটিভ হিসেবে সন্ত্রাসের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় তাকে। ম্যানহাটানের এক আদালতে ২০১০ সালে আফিয়া সিদ্দিকীকে অভিযুক্ত করে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অভিযোগে বলা হয়, তিনি চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা কর্মকর্তাদের গুলি করা হোক। এ অভিযোগে অভিযুক্ত করার দু’বছর আগে তাকে আটক করা হয়েছিল আফগানিস্তান থেকে।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, আফিয়া সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা গুরুতর। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ অভিযোগ মারাত্মক।

কে এই আফিয়া

আফিয়া সিদ্দিকী পাকিস্তানি একজন স্নায়ুবিজ্ঞানী। পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত প্রতিষ্ঠান ব্রান্ডিস ইউনিভার্সিটি এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার কয়েক বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের মনোযোগ যায় তার দিকে। ২০০৪ সালের মে মাসে এফবিআই এবং বিচার বিভাগ তাকে আল কায়েদার একজন অপারেটিভ এবং মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করে।

২০১০ সালে ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে শাস্তি দেওয়ায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানান পাকিস্তানি কর্মকর্তারা। পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি ড. আফিয়া সিদ্দিকীকে ‘ডটার অব দ্য নেশন’ আখ্যায়িত করে তাকে মুক্ত করার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত আফিয়াকে মুক্ত করার তাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়।

২০০৮ সালে তাকে আফগান কর্তৃপক্ষ আটক করে। মার্কিন কর্মকর্তারা ড. আফিয়ার সঙ্গে নিজের হাতে লেখা ‘ডার্টি বম্ব’ বা ভয়াবহ ক্ষতিকর বোমা তৈরি নিয়ে চিরকুটও পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানের নাম উল্লেখ ছিল ওই নোটে। 

আফিয়াকে নিয়ে পাকিস্তানের তৎপরতা

আফগান যুদ্ধ অবসানে আমেরিকা ও আফগান তালেবানদের মধ্যে যেসব বৈঠক হয়েছে, প্রতিটি বৈঠকে অলোচনায় উঠেছে ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মুক্তি প্রসঙ্গ। সমঝোতার অন্যতম শর্ত ছিল এটি। আফিয়া মার্কিন কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন, এমন একটি খবর মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু এ খবর সত্য হয়নি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও তার মুক্তির দাবি নিয়ে মিডিয়ায় সোচ্চার ছিলেন। নওয়াজ শরিফও প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে আফিয়া সিদ্দিকীকে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। তথ্যসূত্র: এইআই, বিবিসি

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর