আগামী ২৫ মার্চ দ্বিতীয়বারের জন্য ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন যোগী আদিত্যনাথ। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। বিকাল ৪টায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হবে লখনউয়ে অবস্থিত দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতরত্ন অটল বিহারী বাজপেয়ী নামাঙ্কিত একানা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রায় ৫০ হাজার দর্শক আসন বিশিষ্ট ওই স্টেডিয়ামে প্রায় ২ শতাধিক ভিভিআইপি ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন।
তবে যোগী মন্ত্রিসভায় কে কে জায়গা পেতে চলেছেন, তা এখনও পরিস্কার নয়। ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তাও চূড়ান্ত হয়নি। কারণ গত মন্ত্রিসভায় ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকা কেশব প্রসাদ মৌর্য্য এবার পরাজিত হয়েছেন। সেই জায়গায় এক নারী বিধায়কসহ তিনজনের নাম উঠে আসছে।
যোগীর এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে রীতিমতো চাঁদের হাট বসতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংসহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রঘুবর দাস, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন। আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, উত্তরপ্রদেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্বকে। উত্তরপ্রদেশের তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিং যাদব, তার পুত্র অখিলেশ যাদব এবং বহুজন সমাজ পার্টির প্রধান মায়াবতীকেও আমন্ত্রিত অতিথির তালিকায় রাখা হতে পারে বলে খবর।
সাম্প্রতিক বিধানসভার নির্বাচনে রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উত্তরপ্রদেশের ৪০৩ আসনের মধ্যে বিজেপি ও তার সহযোগী দলগুলি মিলে একত্রে ২৭৩ টি আসনে জয় পায়, এর মধ্যে বিজেপির একার দখলে ছিল ২৫৫ টি আসন। সেক্ষেত্রে ১৯৮৭ সালের পর ওই রাজ্যটিতে প্রায় ৩৫ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথম পাঁচ বছরের মেয়াদ পার করে দ্বিতীয়বারের জন্য কোন দল সরকারে আসল। ওই নির্বাচনে বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি (সপা) ও তার সহযোগী দলগুলির জোট পায় ১২৫ টি আসন, এর মধ্যে অখিলেশ যাদবের দল সপা একাই পায় ১১১ টি আসন।
চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সাত দফায় ভোট নেওয়া হয় উত্তরপ্রদেশে। গত ১০ মার্চ প্রকাশ করা হয় ফলাফল।
সাম্প্রতিক নির্বাচনে যোগী আদিত্যনাথ নিজেও বিপুল ভোটে জিতে নিজের জনপ্রিয়তা দেখিয়েছেন। প্রথমবারের মতো বিধানসভার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে গোরক্ষপুর বিধানসভার আসন থেকে ১,০৩,৩৯০ ভোটে জয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো বিধায়ক হন যোগী, তিনি হারান সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী উপেন্দ্র দত্ত শুক্লাকে। কারণ ২০১৭ সালের বিধানসভার নির্বাচনে তার দল সরকারে আসলেও ‘লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’ এর একজন সদস্য হিসেবে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হন যোগী। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত গোরক্ষপুর লোকসভা কেন্দ্রের পাঁচবারের সাংসদ ছিলেন যোগী।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা