২৬ জুলাই, ২০২২ ১৯:৪১
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

ইউরোপে রুশ গ্যাস বন্ধের আশঙ্কায় ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত

অনলাইন ডেস্ক

ইউরোপে রুশ গ্যাস বন্ধের আশঙ্কায় ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত

রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ একেবারে বন্ধ করে দিতে পারে- এমন আশঙ্কার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউরোপে আগামীকাল বুধবার থেকেই গ্যাসের সরবরাহ কমে যাচ্ছে, কারণ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি গ্যাজপ্রম জানিয়েছে, তারা নর্ড স্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইন দিয়ে জার্মানিতে গ্যাসের সরবরাহ পূর্ণ ক্ষমতার এক পঞ্চমাংশে নামিয়ে আনবে।

রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় প্রায় এক ডজন ইউরোপীয় দেশ এরই মধ্যে চাপের মধ্যে পড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, এই শীতে যদি রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি মন্ত্রীরা মঙ্গলবার এক জরুরি বৈঠকে এ বছরের অগাস্ট থেকে মার্চ পর্যন্ত গ্যাসের ব্যবহার কমানোর এক প্রস্তাব অনুমোদন করেন। প্রত্যেকটি সদস্য দেশ স্বেচ্ছায় এই কাজ করবে, তবে গ্যাস সংকট গুরুতর রূপ নিলে এটি বাধ্যতামূলক করা হবে। কিছু দেশ এবং কোন কোন শিল্প খাতকে অবশ্য এই বাধ্যবাধকতার বাইরে রাখা হয়েছে। আয়ারল্যান্ড এবং মল্টাকে এই চুক্তি মেনে গ্যাসের চাহিদা কমাতে হবে না, কারণ তারা ইউরোপের গ্যাস নেটওয়ার্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়।

জার্মানির অর্থ মন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেছেন, মস্কো গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিলেও ইউরোপ যে ঐক্যবদ্ধ আছে, এই চুক্তি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সেই বার্তা দেবে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন আমাদের মধ্যে ফাটল ধরাতে পারবেন না। একমাত্র হাঙ্গেরি এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিল।

ইউরোপের দুঃস্বপ্ন
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাসের সরবরাহের ৪০ শতাংশই আসতো রাশিয়া থেকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় রাশিয়া পাল্টা এখন গ্যাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করছে।

রাশিয়া গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে খবর বেরুনোর সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম আরও বেড়ে গেছে। গ্যাস সংকটের কারণে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে জার্মানি। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি শেলের প্রধান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইউরোপে এবার শীতে জ্বালানি রেশনিং করতে হতে পারে। কয়েকদিন আগে জ্বালানি বিষয়ক এক সম্মেলনে বেন ভ্যান বাউরডেন বলেন, ইউরোপের সামনে এখন এক কঠিন শীতকাল।

জার্মানি এরই মধ্যে গ্যাস রেশনিং এর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। যদি পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে দাঁড়ায়, তখন গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকার হস্তক্ষেপ করবে এবং অগ্রাধিকার দেয়া হবে গৃহস্থালি সংযোগ এবং জরুরী সেবা সংস্থাগুলোকে। ফ্রান্সেও জ্বালানির অপচয় রোধে নানা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ফ্রান্সে যেসব দোকানে এয়ারকন্ডিশনিং চালু থাকে, তাদের দোকানের দরজা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে জ্বালানির অপচয় বন্ধ করার লক্ষ্যে। নিয়ন বাতির ব্যবহারও কমাতে বলা হয়েছে।

সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, এয়ারকন্ডিশনিং চালু রেখে দোকানে দরোজা খুলে রাখা একটা অযৌক্তিক কাজ। তিনি বলেছেন, যারা এটা করবে তাদের সাড়ে সাতশো ইউরো জরিমানা করা হবে। সূত্র : বিবিসি বাংলা

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর