২২ আগস্ট, ২০২২ ১৩:৫৩

কী এই ভয়ঙ্কর কিনজাল মিসাইল?

অনলাইন ডেস্ক

কী এই ভয়ঙ্কর কিনজাল মিসাইল?

ছবিতে বিমানের নিচে সাদা মিসাইলটিই কিনজাল। ছবি: সংগৃহীত

কিনজাল মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র। ইউক্রেন যুদ্ধে এখন পর্যন্ত তিনবার এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। এটি সফলতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে দাবি করেছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। তবে যে ঘটনা পুতিনদের কাছে স্মরণীয়, তা যুদ্ধবিরোধী মানুষের কাছে তা উদ্বেগের ও ক্ষোভের। কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্রটি হাইপারসনিক। রয়েছে এর তীব্র মারণ গুণ। সব মিলিয়ে এটি কী বস্তু, সে ব্যাপারে তৈরি হয়েছে আগ্রহ। আসুন এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

হাইপারসনিক মিসাইল কী?

প্রথমে হাইপারসনিক ব্যাপারটা কী, সে সম্পর্কে কিছু বলা যেতে পারে। যদি কোনও কিছুর গতিবেগ শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি হয়, ঘণ্টায় ৬,১৭৪ কিলোমিটার (৩,৮৩৬ মাইল/ঘণ্টা) তাহলে তাকে হাইপারসনিক বলা হবে। 

হাইপারসনিক মিসাইলটা তাহলে কী রকম? বোঝাই যাচ্ছে, দূরন্ত বেগে লক্ষ্যে গিয়ে আছড়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে এই মিসাইল। এটি ব্যালেস্টিক মিসাইলের মতো নয় এটি। ব্যালেস্টিক মিসাইল অনেকটা আকাশে উঠে তার পর গিয়ে লক্ষ্যে আছড়ে পড়ে, যে গতিপথের আকৃতি হয়ে ওঠে অর্ধেক ডিমের মতো। ওঠার সময় গতিবেগ ১৫ হাজার মাইল প্রতি ঘণ্টায় থাকে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল চিরে উঠে যায় মহাশূন্যে, আর যখন সে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে লক্ষ্যে আঘাত করতে, তখন তার গতি অনেক কমে হয়ে যায়– প্রতি ঘণ্টায় ২ হাজার মাইল। কিন্তু হাইপারসনিক মিসাইল বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়েই যায়, এর পথ অনেক নিচুতে। ইঞ্জিনের ক্যারিশমায় সেটি গিয়ে আঘাত করতে পারে লক্ষ্যবস্তুতে।

দু’ধরনের হাইপারসনিক অস্ত্র রয়েছে। একটি হল- হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল। অন্যটি হল- হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিক্যাল বা এইচজিভি। এইচজিভি ছোড়া হয় রকেটের মাধ্যমে। আর হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ছোড়ার জন্য ব্যবহার করা হয়– স্ক্র্যামজেট। বায়ুমণ্ডলের ভিতর দিয়ে প্রচণ্ড বেগে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই ক্র্যামজেট ইঞ্জিনেরই। বলা যেতে পারে, ক্যারিশমাটিক ক্র্যামজেট।

ছুটে আসার সময় হাইপারসনিক মিসাইল কি চিহ্নিত করা যায়?

এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট বলছে, হাইপারসনিক মিসাইল চিহ্নিত করে ধ্বংস করা সহজ নয়। মিসাইল যে ছুটে আসছে, সেটা চিহ্নিত করতে করতেই অনেক দেরি হয়ে যায় বা লক্ষ্যের কাছাকাছি চলে এলে একে বোঝা যায়, কিন্তু তখন মিসাইল ধ্বংস করার আগেই যা হওয়ার হয়ে যায়। 

রিপোর্ট বলছে, আমেরিকার কাছে যে মিসাইল প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে, সেটি দ্রুত এই হাইপারসনিক মিসাইলের গতিপথ বুঝতে পেরে, ব্যবস্থাও নিতে পারে। কিন্তু বহু দেশের কাছেই তেমন শক্তিধর অ্যান্টি মিসাইল সিস্টেম এখনও নেই। কিনজাল বা ড্যাগার যে তাদের কাছে রয়েছে, সে খবর রাশিয়া ঘোষণা করে ২০১৮ সালের মার্চে। 

চীনের কাছেও এই সিস্টেম রয়েছে। তারা দু’বার এটির ব্যবহার করেছে, যদিও তা পরীক্ষামূলক। ২০২১ সালের আগস্টে তাদের ছোড়া হাইপারসনিক মিসাইল পৃথিবী ঘুরে লক্ষ্যের খুব কাছে এসে পড়েছে। ২০১৮ সালে জুলাইয়ে মিগ-৩১ থেকে রাশিয়ার কিনজাল প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ছোড়া হয়, ৫০০ মাইল দূরের লক্ষ্যে। সূত্র: বিবিসি, সিএনবিসি, রয়টার্স, আনাদোলু এজেন্সি

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর