দীর্ঘ আট মাস ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। দীর্ঘ এই যুদ্ধে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল ইতোমধ্যে ‘গণভোটের’ মাধ্যমে নিজেদের ভূমির সঙ্গে একীভূত করে নিয়েছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেন তা প্রত্যাখান করে ওই সব অঞ্চল পুনরুদ্ধারে দুর্বার যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু এলাকা পুনরুদ্ধারের দাবিও করেছে ইউক্রেন। সেসব অঞ্চলে রুশ বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
যুদ্ধের এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনজুড়ে মিসাইল হামলা চালায় রাশিয়া। এতে ইউক্রেনের জাতীয় বিদ্যুত গ্রেডে বিপর্যয় দেখা দেয়। এরপর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় দেশটির অর্ধেক অংশ। ক্রমাগতভাবে মিসাইল হামলা চালিয়েই যাচ্ছে রাশিয়া। প্রতিদিন অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে দেশটির একেকটি অঞ্চল।
এমতাবস্থায় দেশটিতে ‘ডার্টি বোমা’ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাশিয়া অভিযোগ করেছে, ইউক্রেন এমন উসকানি সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে যার মধ্যে কোনো ডার্টি বোমা ব্যবহারের বিষয় থাকতে পারে।রবিবার আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, এবং তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের সময় এই অভিযোগ করেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
ডার্টি বোমা হচ্ছে এমন এক বিস্ফোরক যা তেজস্ক্রিয় আবর্জনা ছড়ায়।
যদিও এই বোমার পরমাণু অস্ত্রের মতো ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা নেই। তবে এই বোমা বিস্ফোরণের ফলে বিস্তৃত অঞ্চলে তেজস্ক্রিয় আবর্জনা ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং তার থেকে পরিবেশে পরমাণু দূষণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
রাশিয়ার কর্মকর্তারা বারবার অভিযোগ করেছেন যে, ইউক্রেন এই ধরনের বোমার ব্যবহার করে পারে। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ওই অভিযোগের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই অভিযোগ বিপজ্জজনক মিথ্যা। তিনি বলেন, রাশিয়ার বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে তারা নিজেরাই ইউক্রেনের মাটিতে এই ধরনের তেজস্ক্রিয় বোমা ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া যদি অভিযোগ করে যে, ইউক্রেন এই ধরনের কোনও কিছুর পরিকল্পনা করছে তার অর্থ হচ্ছে রাশিয়া নিজেই সেই পরিকল্পনা করেছে। এখন বিশ্ববাসীর উচিত রাশিয়ার বিরুদ্ধে যতটা দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া। সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/কালাম