৪ মার্চ, ২০২৩ ১১:৫৬
বিবিসি, এনডিটিভির প্রতিবেদন

‘কৈলাসা’ নামে হঠাৎ নতুন রাষ্ট্রের দাবি, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে কি? (ভিডিও)

অনলাইন ডেস্ক

‘কৈলাসা’ নামে হঠাৎ নতুন রাষ্ট্রের দাবি, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে কি? (ভিডিও)

জেনেভায় জাতিসংঘ অনুষ্ঠানে ‘মা বিজয়প্রিয়া নিত্যানন্দ’ (পিছনে)। ছবি: সংগৃহীত

হঠাৎ একটি নতুন রাষ্ট্রের দাবি উঠেছে। এর নাম ইউনাইটেড স্টেট অব কৈলাসা (ইউএসকে)। এটি একটি দ্বীপ রাষ্ট্র বলে দাবি করা হচ্ছে।

বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি জেনেভায় জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার সম্মেলনে এক সুন্দরী তরুণী বক্তব্য দিলে।

কপালে লম্বা লাল টিপ। মাথায় জটা চুল। তার নীচ থেকে উঁকি দিচ্ছে সোনার টিকলি। গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। পরনে গেরুয়া শাড়ি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জেনেভায় ১৯তম অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার সম্মেলনে এই বেশ নিয়েই ইংরেজিতে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন ওই তরুণী। তখন উপস্থিত সবাই নড়েচড়ে বসেন। সবারই প্রশ্ন-  কে তিনি? এ রকম সাজপোশাক কেন? কোন দেশেরই-বা প্রতিনিধি তিনি? পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টের পর ওই তরুণীর পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। আর এতেই বেশ হইচই পড়ে যায়।

স্বঘোষিত হিন্দু ধর্মগুরু নিত্যানন্দের টুইটার অ্যাকাউন্টে ওই তরুণীর ছবি পোস্ট করে পরিচয় দেওয়া হয়। বলা হয়, ওই তরুণী হচ্ছেন ‘মা বিজয়প্রিয়া নিত্যানন্দ’ এবং তিনি ‘নতুন দেশ’ কৈলাসার জাতিসংঘ প্রতিনিধি।

২০১৯ সালে নিত্যানন্দের বিরুদ্ধে ভারতে ধর্ষণ এবং অপহরণের অভিযোগে একাধিক মামলা হয়। ওই সময় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি। পরে নিত্যানন্দ দাবি করেন, নিজের এক দেশ তৈরি করেছেন তিনি। এটির নাম ‘ইউনাইটেড স্টেট অব কৈলাসা’। সে দেশে সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। শুধু হিন্দুদের জন্যই তৈরি হয়েছে এই দেশ। সেখানে হিন্দুদের সংস্কার, ঐতিহ্যকে লালন করা হয়। 

বিবিসি জানিয়েছে, ইকুয়েডরের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বীপ কিনে নিয়েছেন নিত্যানন্দ। এটিকেই তিনি নতুন দেশ বলে দাবি করছেন। তবে এ ব্যাপারে ইকুয়েডর কর্তৃপক্ষের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ভারত থেকে পলাতক স্বঘোষিত হিন্দু ধর্মগুরু নিত্যানন্দ। ছবি: সংগৃহীত

পলাতক নিত্যানন্দের দাবি করা দেশটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘কৈলাসা’ হল একটি আন্দোলন যা, ‘কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের হিন্দু আদি শৈব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের, উচ্চাকাঙ্ক্ষী বা নির্যাতিত হিন্দুরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে এবং তাদের আধ্যাত্মিকতা, শিল্প এবং সংস্কৃতিকে অবমাননা, হস্তক্ষেপ ও সহিংসতা থেকে মুক্ত করে প্রকাশ করতে পারে।

বৃহস্পতিবার টুইটারে ইউএসকে এর পক্ষ থেকে বিদেশিদের ই-নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ই-ভিসা আহ্বান করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ইউএসকে-এর পৃথক পতাকা, সংবিধান, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং পাসপোর্ট আছে। টুইটারে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘কৈলাসা হচ্ছে আন্তর্জাতিক হিন্দু প্রবাসীদের আবাসস্থল এবং আশ্রয়স্থল।’

তবে নিত্যানন্দ যে দাবি-ই করুন, তার তৈরি এই দেশের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আদৌ কৈলাসাকে দেশের স্বীকৃতি দেওয়া যেতে পারে কি না, তা নিয়েও প্রশ্নও উঠেছে। 

এদিকে, জাতিসংঘ জানিয়েছে যে, সংস্থাটির দুটি অনুষ্ঠানে পলাতক ভারতীয় গুরুর কাল্পনিক দেশের প্রতিনিধিদের দ্বারা দেওয়া বিবৃতি উপেক্ষা করা হবে।

কৈলাসার প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিরা ফেব্রুয়ারিতে জেনেভায় জাতিসংঘের দুটি কমিটির বৈঠকে অংশ নেন।

জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের দাখিল করা ডকুমেন্টগুলো আলোচিত বিষয়গুলোর সঙ্গে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ এবং ‘স্পর্শকাতর’। সূত্র: বিবিসি, এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া ডটকম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর