করোনা মহামারীর প্রভাবের কারণে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলো বড় ধরনের মন্থরতার মধ্যে পড়ে। তবে এশিয়ার দেশ সৌদি আরবের অর্থনীতিতে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার (ওইসিডি) সর্বশেষ তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে বিশ্বের ২০টি বৃহত্তম অর্থনীতির (জি-২০) মধ্যে সৌদি আরবের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল সবচেয়ে বেশি।
গত বছর জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য ও তেলবহির্ভূত বেসরকারি খাতের শক্তিশালী গতিশীলতায় আরব বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিটি সম্প্রসারণ হয়েছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যাহত হয়। তবে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ২০২১ সালে হঠাৎ ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির পর ২০২২ সালে বেড়েছে ১০ শতাংশ।বুধবার প্রকাশিত ওইসিডি’র প্রতিবেদন অনুসারে, সৌদি আরবের পরের অবস্থানে ভারত, বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে যথাক্রমে তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়া, বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পরিমাণ যথাক্রমে ৫ দশমিক ৬ ও ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি জাপান মুখোমুখি হয় সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধির, দেশটির মোট জিডিপি বেড়েছে মাত্র ১ শতাংশ।
প্যারিসভিত্তিক সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাথমিক প্রভাব থেকে পুনরুদ্ধার-পরবর্তী জি-২০ অর্থনীতিগুলো ২০২১ সালে গড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। অথচ ২০২২ সালে তাদের গড় প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল মাত্র ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিগুলো গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে তীব্র মন্থরতার শিকার হয়। আগের প্রান্তিকের ১ দশমিক ৪ শতাংশের তুলনায় ২০২২ সালের শেষ তিন মাসে জিডিপি দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসে। এদিকে ২০২২ সালের শেষ তিন মাসে চীনের প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল শূন্যের খাতায়, যদিও তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটি ৩ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়। তবে ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বেশির ভাগ জি-২০ দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি মন্থর বা নেতিবাচক হয়েছে।
আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে দেশটি ১ দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি সংকোচনের মুখে পড়ে। যদিও চতুর্থ প্রান্তিকের আগের তিন মাসে ১ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে।
জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি উভয়ই গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে দশমিক ৪ শতাংশ সংকোচনের মধ্যে পড়ে। ব্রাজিল ও ইতালির জিডিপি যথাক্রমে দশমিক ২ শতাংশ ও দশমিক ১ শতাংশ সংকোচনের মুখোমুখি হয়।
তবে ইন্দোনেশিয়া গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ২ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করে। যেখানে সৌদি আরবের জিডিপি একই সময়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়।
এদিকে ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে সামান্য সংকোচনের পর তুরস্কের জিডিপি বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ। তবে ইউরোঞ্চল, কানাডা, জাপান ও যুক্তরাজ্য গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে আগের বছরের মতোই সমান্তরাল প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। সূত্র: দ্য ন্যাশনাল নিউজ
বিডি প্রতিদিন/কালাম