৬ মে, ২০২৩ ১১:৫০

ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও আরও যা যা তৈরি করতে পারেন গ্রেফতার ভারতের সেই বিজ্ঞানী!

অনলাইন ডেস্ক

ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও আরও যা যা তৈরি করতে পারেন গ্রেফতার ভারতের সেই বিজ্ঞানী!

সংগৃহীত ছবি

তার নাম প্রদীপ কুরুলকার, তিনি ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন বা ডিআরডিও)-এর বিজ্ঞানী। গত বুধবার দেশটির মহারাষ্ট্রের জঙ্গি দমন শাখা (এটিএস) তাকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, তিনি ভারতে বসে প্রতিরক্ষা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ নথি পাকিস্তানে পাচার করেছেন।

এটিএসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অনুমান, হানি ট্র্যাুপ বা ‘মধুফাঁদ’-এ আটকা পড়েই প্রতিবেশী দেশে গোপন তথ্য পাচার করেছেন তিনি।

কে এই প্রদীপ কুরুলকার? তার গ্রেফতারির পর থেকেই ঘোরাফেরা করছে এই প্রশ্ন।

৬০ বছর বয়সী প্রদীপ ভারতের পুনের ডিআরডিও-এর সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবরেটরির ডিরেক্টর পদে নিযুক্ত ছিলেন।

প্রদীপের জন্ম ১৯৬৩ সালে। পুনের সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৯৮৫ সালে খুব ভাল নম্বর পেয়ে কলেজের গণ্ডি পার হন তিনি।

১৯৮৮ সালে ডিআরডিও-তে যোগ দেন প্রদীপ। তামিলনাড়ুর আভাডিতে ডিআরডিও’র ‘কমব্যাট ভেহিক্যালস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এস্ট্যাবলিশমেন্ট’ বিভাগের হয়ে তিনি কাজ করতেন।

কাজে যোগ দিয়ে আরও পড়াশোনার ইচ্ছা জন্মায় প্রদীপের। কাজ করতে করতেই আইআইটি কানপুরে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়ে যান তিনি।

আইআইটি কানপুরে প্রদীপ প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করেন। মিসাইল লঞ্চার, মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং, অত্যাধুনিক রোবোটিক্স এবং মানবহীন ক্ষেপণাস্ত্রের নকশা তৈরিতে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে তার।

পড়াশোনা শেষে প্রদীপ আবার ডিআরডিও-তে যোগ দেন। সেখানে খুব তাড়াতাড়ি পদোন্নতি হয় তার। ভারতের হয়ে বেশ কিছু প্রতিরক্ষা সামগ্রীর নকশা তিনি নিজের হাতে তৈরি করেছিলেন।

প্রধান ডিজাইনার হিসেবে প্রদীপ হাইপারবারিক চেম্বার, মোবাইল পাওয়ার সাপ্লাইয়ের মতো প্রযুক্তিতে কাজ করেছেন।

একই সঙ্গে এমআরএসএএম, নির্ভয় সাবসনিক ক্রুজ মিসাইল সিস্টেম, প্রহর, কিউআরএসএএম এবং এক্সআরএসএএম এর জন্য মিসাইল লঞ্চার তৈরির কাজেও অবদান রয়েছে প্রদীপের।

সেই প্রদীপকেই গ্রেফতার করেছে ভারতের মহারাষ্ট্রের এটিএস। প্রাথমিকভাবে পুলিশ অনুমান করছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুন্দরী নরীদের ছবি দেখিয়ে প্রদীপের সামনে ফাঁদ পাতা হয়। এরপরই নাকি তিনি গত বছর ছদ্মবেশী পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

পুলিশের মতে, অভিযুক্ত প্রদীপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও কল এবং হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ‘পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ (পিআইও)’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

প্রদীপ ডিআরডিও-এর অন্যতম শীর্ষ পদে ছিলেন। তাই অনেক গোপন নথি সম্পর্কেও জানতেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রদীপ পদের অপব্যবহার করায় সংবেদনশীল সরকারি নথি পাকিস্তানের হাতে চলে যেতে পারে, যা পরবর্তীকালে ভারতের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।

মুম্বাইয়ের কালাচৌকি এটিএস পুলিশ স্টেশনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। এক এটিএস কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।

বুধবার গ্রেফতার করার পর বৃহস্পতিবার প্রদীপকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে এটিএস হেফাজতে পাঠিয়েছে। সূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া, ডব্লিউআইওএন, ইন্ডিয়া ডটকম, লাইভমিন্ট, ইন্ডিয়া টুডে, ফ্রি প্রেস জার্নাল, হিন্দুস্তান টাইমস

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর