মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ থেকে বহিষ্কার হলেন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা জর্জ সান্তোস।
শুক্রবার সহকর্মীদের ভোটে কংগ্রেস ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। ফৌজদারি দুর্নীতি ও প্রচারণার অর্থ তছরুপের অভিযোগে বহিষ্কারের পক্ষে ভোট দেন তারা।
বিতর্কিত নবীন আইনপ্রণেতাকে অপসারণের জন্য ৩১১-১১৪ ভোট পড়ে। সান্তোসকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন ছিল। এর আগে দুই দফা ভোটে সংখ্যাগরিষ্টতা পাওয়া যায়নি।অতীত সম্পর্কে মিথ্যার প্রকাশ, একটি ফৌজদারি অভিযোগ ও কংগ্রেসের নৈতিকতা বিষয়ক তদন্তের প্রতিটিই ৩৫ বছরের সান্তোসের বিরুদ্ধে যায়। মার্কিন ইতিহাসে হাউস থেকে বহিষ্কৃত হওয়া ষষ্ঠ সদস্য তিনি।
ভোটের পরপরই হাউস থেকে বের হয়ে আসেন জর্জ সান্তোস। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানান। দাবি করেন, অনানুষ্ঠানিকভাবে তিনি আর কংগ্রেসের সদস্য নন।
পরে একজন ক্যাপিটল কর্মীকে সান্তোসের সাবেক অফিসের তালা পরিবর্তন করতে দেখা যায়। দরজা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় তার নামফলক।
এদিন হাউস স্পিকার মাইক জনসন ও শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান নেতারা বহিষ্কারের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে তাদের আহ্বান প্রভাব ফেলেনি। কিছু আইনপ্রণেতা চেয়েছিলেন, সান্তোসের ভাগ্য আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে বা আইনি চ্যালেঞ্জের ওপর ছেড়ে দিতে।
সান্তোস গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি স্বীকার করেছেন, জীবনীতে অনেকগুলো ভুল তথ্য রয়েছে। এছাড়া ফেডারেল প্রসিকিউটররা প্রচারের তহবিল তছরুপ ও দাতাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।
গত মাসের শুরুতে একদফা বহিষ্কারের প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যান জর্জ সান্তোস। তখন সহকর্মীরা বলেছিলেন, ফৌজদারি মামলা আগে সমাধান হওয়া উচিত। কিন্তু পরবর্তীকালে হাউজ এথিক্স কমিটির প্রতিবেদন তার সমর্থন কমিয়ে দেয়।
গত মে মাসে প্রতারণা, সরকারি তহবিল তছরুপ, মুদ্রা পাচার ও কংগ্রেসে মিথ্যা বক্তব্য দেওয়াসহ ১৩টি অভিযোগে সান্তোসকে অভিযুক্ত করে আদালত। এরপর অক্টোবরে তার বিরুদ্ধে আরও ১০টি অভিযোগ তোলা হয় আদালতে।
গত মাসে একটি দ্বিদলীয় কংগ্রেসনাল তদন্তে দেখা গেছে, প্রচারণার অর্থ বোটক্সসহ স্পা চিকিৎসা, বিলাসবহুল পণ্য ক্রয় বাবদ খরচ করেছেন। এথিক্স কমিটির রিপোর্টের পর, সান্তোস বলেছিলেন যে, তিনি আগামী বছর পুনরায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
২০২২ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের পরপরই সমস্যায় পড়েন জর্জ সান্তোস। ওই সময় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, তিনি আসলে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি বা গোল্ডম্যান শ্যাস ও সিটিগ্রুপে কাজ করেননি। মিথ্যাভাবে ইহুদি ঐতিহ্যের দাবি করেছিলেন সান্তোস। ভোটারদের বলেছিলেন, তার দাদা-দাদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের কাছ থেকে পালিয়ে বেঁচেছিলেন। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আজাদ