গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এরই মধ্যে ১১৭ দিনে পৌঁছেছে ইহুদিবাদীদের এই নৃশংস আগ্রাসন।
দীর্ঘ চার মাসের এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৭৫২ জনে। এর অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতায় আহত হয়েছে আরও ৬৫ হাজার ৬৩৬ ফিলিস্তিনি।
এদিকে, ইসরায়েলের অবিরাম বোমার আঘাতে ঘরবাড়ি হারিয়ে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে গাজার বাসিন্দারা। দীর্ঘ চার মাসের ইসরায়েলি বাহিনীর আকাশ ও স্থল হামলায় উপত্যকাটির অর্ধেকেরও বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক বিশ্লেষণে এই তথ্য উঠে এসেছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে গাজায় আইডিএফ-এর গোলা বর্ষণ আরও জোরদার করা হয়। তাতে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এবং মধ্য গাজার বসত বাড়িসহ হাসপাতাল, স্কুল এবং বিভিন্ন রেস্তোরাঁ। সংঘাত শুরুর পর থেকে গাজাবাসীকে নিরাপত্তার জন্য দক্ষিণাঞ্চলে সরে যেতে বলে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে গাজার দক্ষিণে আশ্রয় নিয়েও নিস্তার পায়নি উপত্যকাটির বেসামরিক বাসিন্দারা। তাদের ঘরবাড়িসহ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হামলা আরও তীব্র করেছে আইডিএফ।
গণমাধ্যমটি স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বোমায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে গাজার প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার স্থাপনা, যা পুরো গাজার ৫০ থেকে ৬১ শতাংশ।
নিউইয়র্ক সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরি শের এবং ওরেগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যামন ভ্যান ডেন হোয়েক এই তথ্য বিশ্লেষণি প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, গাজার স্থাপনাগুলোর উচ্চতা বা কাঠামোর আকস্মিক পরিবর্তন স্থাপনাগুলোর ধ্বংস হওয়ার তথ্য দিচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়া করেছে ইসরায়েল। যাদের প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা আটকা পড়েছে দক্ষিণ গাজায়। হামাস নিধনের নামে বেসামরিকদের উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। তেল আবিবের লাগাতার বোমা বর্ষণে ধ্বংস হয়েছে বসতি-স্থাপনা, শপিংমল, শিক্ষাকেন্দ্র, হাসপাতালসহ আবাদি জমিও।
উপত্যকাটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের অন্তত ৩৮ হাজার বা ৪৬ শতাংশ স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরায়েল। গত কয়েক দিনে এই শহরের অন্তত দেড় হাজার ভবনকে লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/আজাদ