দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচারে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এই সময়ে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অবরুদ্ধ ওই উপত্যকায় নিহত হয়েছে ৩০ হাজার ৪১০ ফিলিস্তিনি। এর অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে আরও ৭১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি বর্বরতায় ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে পুরো গাজা। মসজিদ, গির্জা, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ অসংখ্য স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারপরও থামছে না এই ধ্বংসযজ্ঞ।
যদিও দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন যুদ্ধবিরতির জন্য ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর আলোচনা চলছে, তবে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হচ্ছে না গাজার শাসক গোষ্ঠীটি।রবিবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে আবারও আলোচনা শুরু হয়।
হামাসের এক প্রতিনিধি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু তারা কোনও অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন না।
কেন হামাস অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হচ্ছে না, সে বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছেন দোহা ইনস্টিটিউট অব গ্যাজুয়েট স্টাডিসের বিশ্লেষক মোহাম্মদ এলমাসরি।
তিনি জানিয়েছেন, ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হওয়া ইসরায়েলের জন্য খুবই সহজ। কিন্তু হামাসের জন্য বিষয়টি ‘খুবই কঠিন’। কারণ এটির সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিষয় জড়িত রয়েছে।
তিনি বলেছেন, “হামাসকে একাধিক বিষয় হিসাব করতে হচ্ছে। একদিকে, গাজার ফিলিস্তিনিরা বিরতির জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। তাদের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। তারা মারা যাচ্ছেন, বোমায় অথবা প্রয়োজনীয় পণ্যের অভাবের কারণে।”
কিন্তু ইসরায়েলের শর্তে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া হামাসের জন্য খুবই কঠিন।
তিনি বলেন, “কার্যত ইসরায়েলের শর্ত হল- গাজাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া। তারা এটি স্পষ্ট করেছে, কথায় এবং কাজে। তারা যতটা সম্ভব গাজাকে ঠিক ততটা ধ্বংস করে দিতে চায়। গাজাকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিতে চায় এবং সবশেষে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে তাড়িয়ে দিতে চায়।”
এখন হামাসের লক্ষ্য হল- যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করা। কারণ তারা চায় গাজাবাসীর ওপর সবধরনের হামলা বন্ধ হোক এবং তাদেরকে স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার দেওয়া হোক। সূত্র: আলজাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আজাদ