জি সেভেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টিন ব্লিনকেন।
তাকে প্রথম প্রশ্নটিই করা ইরানের ইসরায়েলের হামলা প্রসঙ্গে। জানতে চাওয়া হয়, যুক্তরাষ্ট্রকে আগে অবহিত করা হয়েছিল কিনা।
‘যুক্তরাষ্ট্র কোনো আক্রমণে সঙ্গে জড়িত নয়,’ এর বাইরে আর কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।তিনি বলেন, ‘যেকোনো সম্ভাব্য সংঘাত’ এবং উত্তেজনা এড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও জি সেভেন।
ব্লিনকেন আরও যোগ করেন, ইসরায়েল একটা ‘নজিরবিহীন হামলার’ শিকার হয়েছে এবং ‘ইসরায়েল যেন নিজেকে রক্ষা করতে পারে, এটা নিশ্চিত করাই’ যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য।
প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি কি মনে করেন, ইরান যাতে প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য না হয় সেজন্যই আজকে সীমিত পরিসরে হামলা করা হয়েছে, সেই হিসেবে আপনি কী আশাবাদী (উত্তেজনা নিরসনে)?
তিনি আবারও বলেন ওই ঘটনা নিয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এবং জি সেভেনের পক্ষ থেকে শুধু এইটুকু বলতে পারি, উত্তেজনা নিরসন এবং বড় ধরনের সংঘাত এড়ানোতেই আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ। সত্যি বলতে গেলে অক্টোবরের ভয়াবহ ঘটনা এবং তার প্রথম দিনটি থেকেই সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’
‘চেষ্টা চলমান থাকবে’ বলে জানান ব্লিনকেন।
ব্লিনকেনকে আরও একবার ইরানে সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলো। তার কাছে প্রশ্নটা এভাবে তুলে ধরা হয়, ইরান এবং ইসরায়েল যেন পরিমিত এবং হিসাব নিকাশ করে পদক্ষেপ নিচ্ছে। তার মানে কি বড় ধরনের সংঘাত এড়ানো গেল?
রাফাহ্’র (ফিলিস্তিনি এলাকা) ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়।
ব্লিনকেন আগের কথারই পুনরাবৃত্তি করেন। বলেন, তার নজর উত্তেজনা নিরসনে এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানান।
রাফাহ্’র ব্যাপারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সেখানে বড় ধরনের সামরিক অভিযান সমর্থন করতে পারে না। তিনি বলেন, রাফাহ্ এলাকায় প্রায় ১৪ লাখ মানুষ আছেন। কোনো সংঘাতের মুখে তাদের সরিয়ে আনা ‘কঠিন কাজ’।
তিনি বলেন, সেখানে ব্যাপক সামরিক অভিযানের ‘পরিণতি হবে ভয়াবহ’। গাজার নেতৃত্বে থাকা হামাসেরও সমালোচনা করেন ব্লিনকেন।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহান্তে আক্রমণের প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইস্ফাহান প্রদেশ একাধিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এবিসি, সিবিএস এবং সিএনএন, অন্যান্য মিডিয়া মধ্যপ্রাচ্যের সময় শুক্রবার ভোরে ইরানে ইসরায়েলের হামলার কথা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোকে বলেছেন, ইসরায়েল ইরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে। তবে বিদেশ থেকে ইরানে কোনো ‘হামলা’ হয়নি বলে খবর দিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম।
এর আগে গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে।
এ ঘটনার পর ইরান এক সপ্তাহের কম সময় শনিবার রাতে ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো সরাসরি হামলা চালায়। তারা ৩০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।
সূত্র : বিবিসি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত