৩ জুন, ২০২৪ ১২:১২

ব্রাজিলে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু

অনলাইন ডেস্ক

ব্রাজিলে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু

প্রতীকী ছবি

চলতি বছর লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। এ বছর পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয়েছে যে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে সরকারি হিসাবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রেকর্ড ৫৫ লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সারাবিশ্বে মশাবাহিত এই ভাইরাসের বিস্তার আরও বাড়তে পারে।

উষ্ণ আবহাওয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনোর উষ্ণতা বৃদ্ধি লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশটিকে কয়েক বছর ধরে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ডেঙ্গু মহামারীর সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা চরম আকার ধারণ করেছে। চলতি বছরে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ লাখ হতে পারে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির একাধিক রাজ্যে জরুরি ব্যবস্থা এবং টিকাদান কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। বছরের ছয় মাস না যেতেই গত বছরের আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে ডেঙ্গু। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেশটিতে ৫৫ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৪০ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ।

এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

ডেঙ্গু ছাড়াও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে ব্রাজিলের জনগণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গুকে একটি উল্লেখযোগ্য জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করেছে। ২০০০-১৯ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্তের হার ১০ গুণ বেড়েছে। 

বিশেষজ্ঞরা ডেঙ্গু রোগ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত উচ্চ তাপমাত্রাকে দায়ী করেছেন। তারা বলেন, “এ প্রবণতা ইঙ্গিত করে যে ভবিষ্যতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী ঘটতে পারে।”

গত বছরের শেষের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, দক্ষিণ ইউরোপের অনেক দেশে ডেঙ্গু বিস্তার লাভ করেছে। ব্রাজিলের কথা উল্লেখ করে অসওয়াল্ডো ক্রুজ ফাউন্ডেশনের গবেষক ক্রিস্টোভাম বার্সেলোস বলেন, “আগে হয়তো গ্রীষ্মকালে পাঁচদিন অস্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকত, কিন্তু এখন তা ২০-৩০ দিনে পরিণত হয়েছে।”

ফাউন্ডেশনের আরেক গবেষক ফেলিপ নাভেকা বলেন, “তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ভাইরাস বহনকারী মশার দ্রুত পরিপক্বতা হয়। একই সঙ্গে জলবায়ুগত কারণে বৃষ্টিপাতের ধরন বদলে যাওয়ায় মশাদের প্রজননের ক্ষেত্রে সহায়কা ভূমিক পালন করছে।”

ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপের মধ্যে ব্রাজিলের মানুষ সেরোটাইপ-২ দ্বারা বেশি সংক্রমিত হচ্ছে। তবে এ সেরোটাইপের বিরুদ্ধে ব্রাজিলের জনগণ কম টিকাপ্রাপ্ত বলেও জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস

বিডি প্রতিদিন/একেএ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর