১৯ জুন, ২০২৪ ০৮:৫৪

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপেও বাধ্যতামূলক সতর্কবাণী চান মার্কিন সার্জন জেনারেল

অনলাইন ডেস্ক

সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপেও বাধ্যতামূলক সতর্কবাণী চান মার্কিন সার্জন জেনারেল

সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসক্তি আজকাল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অনেক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞই ব্যাপারটি নিয়ে শঙ্কিত। খেলাধুলাহীন অনলাইন বা ভার্চুয়াল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়া এই প্রজন্মগুলোকে নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। অনেকে দাবি করছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের নামে মানুষ আসলে এক সমাজবিচ্ছন্ন জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। যে জীবনে খেলাধুলা নেই, আড্ডা নেই, ভ্রমণ নেই, গায়ে গা ঘেঁষে বসার আকূলতা নেই; আছে কেবল বিচ্ছিন্নতা। আর এই বিচ্ছিন্নতাই মানুষকে ধীরে ধীরে হতাশ করে তুলছে। ডেকে আনছে নানা রকম রোগবালাই। বাস্তবতা বহির্ভূত এক কাল্পনিক জগতে বসবাস করতে শুরু করেছে মানুষ। যেখানকার আবেগ-অনুভূতি অনেকখানি মেকি আর ঠুনকো। ফলে বাড়ছে মানসিক অশান্তি, অস্থিরতা। 

এবার সেই উদ্বেগে আরো এক মাত্রা চড়ালেন মার্কিন সার্জন জেনারেল বিবেক মার্থি। তিনি এবার সিগারেটের প্যাকেটের মতো করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপগুলোতেও চাইলেন বাধ্যতামূলকভাবে সতর্কবাণী। তিনি বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তরুণ বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন ক্ষতিকর। আর সেকারণেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপে সতর্কবাণী লেখা থাকা দরকার।

সম্প্রতী নিউইয়র্ক টাইমসে লেখা এক উপসম্পাদকীয়তে বিবেক মার্থি এ বিষয়ে বিশদ বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র বিবেক মার্থির দাবি, কেবল সতর্কবাণীতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো থেকে তরুণদের নিরাপদে রাখবে না। তবে সচেতনতা বাড়বে। আর সেখান থেকেই তাদের আচরণেও পরিবর্তন আসবে। তার মতে, সতর্ক বাণী লেখায় ধূমপানের ক্ষেত্রে সফলতা পাওয়া গেছে, তামাক নিয়ে করা গবেষণায় এ ধরনের ফল পাওয়া গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অ্যাপে এ ধরনের সতর্কবাণী লেখার জন্য মার্কিন কংগ্রেসে আইন পাস করতে হবে বলেও মনে করেন এই সার্জন জেনারেল।

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলে দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছেন যুব অধিকারবিষয়ক পরামর্শক ও যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের একাংশ। এসব ক্ষতির মধ্যে মনোযোগের সময় কমে যাওয়া, অনলাইন হয়রানি অন্যতম।

মার্কিন সার্জন জেনারেলও বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অ্যাপগুলোতে সিগারেটের মতো করে বাধ্যতামূল সতর্কবাণী লেখার সময় এসেছে। সেখানে লিখতে হবে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বড় ধরনের ক্ষতি করে’।

এই মতামত সম্পর্কে জানতে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা এবং টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

নিউইয়র্ক রাজ্যের আইনপ্রণেতারা অভিভাবকদের সম্মতি ছাড়া ১৮ বছরের কম বয়সীদের ‘আসক্তিমূলক’ বিষয়বস্তু থেকে বাঁচাতে চলতি মাসে আইন পাস করেছেন। গত মার্চে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস ১৪ বছরের কম বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং ১৪ ও ১৫ বছর বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অভিভাবকের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক-সংক্রান্ত একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন।


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর