ভারতে লোকসভার স্পিকার নির্বাচনের পরই বিজেপি স্পষ্ট করে দিয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা কমলেও তাদের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাতের পথেই থাকবে তারা। বুধবার স্পিকার পদে বিজেপির প্রার্থী ওম বিড়লা কণ্ঠভোটে জেতেন।
স্পিকার নির্বাচনের পর বিরোধীদের অভিনন্দন জানানোর মধ্য দিয়ে মনে হচ্ছিল, শাসক দলের মনোভাবে কিছুটা পরিবর্তন আসবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর সঙ্গে বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীও স্পিকারের দিকে এগিয়ে যান এবং স্পিকারকে নির্দিষ্ট আসনে বসান। মোদির সঙ্গে রাহুলের করমর্দনও হয়, যা আগে দেখা যায়নি।
বিরোধী নেতারা স্পিকারকে অভিনন্দন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন যে, তারা যথাযোগ্য সম্মান পাবেন এবং গণতান্ত্রিক পরম্পরা রক্ষা পাবে। স্পিকারকেও সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।কিন্তু অভিনন্দনের পরেই স্পিকার ওম বিড়লা একটি দীর্ঘ বিবৃতি পাঠ করেন, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার উল্লেখ করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ‘স্বৈরাচারী’ আখ্যা দেন এবং সেই সময়কে দেশের ইতিহাসের ‘কালো অধ্যায়’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, সে সময় জোর করে বন্ধ্যত্ব করানো, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের আদালতে যেতে না দেওয়া এবং সংবাদপত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
এই বিবৃতি পাঠ শুরু হতেই বিরোধীরা তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং স্লোগান দিতে থাকেন। বিরোধীদের দাবি, ৫০ বছর আগের ঘটনা টেনে এনে বর্তমান সরকারের অঘোষিত জরুরি অবস্থাকে আড়াল করতে চাইছে বিজেপি।
জরুরি অবস্থায় নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করতে সরকার পক্ষের সদস্যরা উঠে দাঁড়ালেও বিরোধীরা প্রতিবাদ চালিয়ে যান। এরপর স্পিকার ওম বিড়লা সারা দিনের মতো অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন।
এতে বোঝা যাচ্ছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও মোদি সরকার তার আক্রমণাত্মক ভূমিকা বজায় রাখবে। বিরোধীদের পক্ষে তেমন কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করা বৃথা। এছাড়া, বিরোধীদের প্রতিবাদ লোকসভা টিভিতে দেখানো হয়নি, কেবল স্পিকারকে দেখানো হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল