নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, ভারতবর্ষ যে হিন্দু রাষ্ট্র নয়, তা এবারের লোকসভা ভোটে প্রমাণিত হয়েছে। ভারতের মানুষ যে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে লালিত, তা এই ভোটে দেখাও গেছে। ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। তাকে বলপূর্বক হিন্দুরাষ্ট্রে পরিণত করা উচিত নয়।
অমর্ত্য সেন বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতা বিমানবন্দরে পা রেখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। অর্মত্যর কথায়, নতুন সরকারের উচিত রাজনৈতিক দিক থেকে আরও মুক্তমনা হওয়া। তবে তার মতে, নতুন যে মন্ত্রিসভা হয়েছে, তা আগের মন্ত্রিসভার মতোই। সামান্য রদবদল হলেও রাজনৈতিকভাবে যারা শক্তিশালী ছিলেন, তারা এখনও শক্তিশালী। অমর্ত্যর যুক্তি, ভারতকে হিন্দুত্বের নিরিখে দেখা হচ্ছে। মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেশে তা হওয়ার কথা নয়।
ভারতের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে শাসক দল বিজেপি বা কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। যদিও নির্বাচনের আগে এবং বুথফেরত জরিপে বিজেপি বিপুল ভোটে জিতবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু তা তো হয়ইনি, বরং কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট ভালো সাফল্য পেয়েছে। বিজেপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত উত্তর প্রদেশে দলটির ভরাডুবি হয়েছে।
অযোধ্যায় নির্মিত রামমন্দির প্রসঙ্গে বলেন, অনেক খরচ করে বড় মন্দির বানিয়েছে। ভারত মহাত্মা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর দেশ। এখানে এমনটা হওয়া উচিত ছিল না। এতে ভারতের আসল পরিচয়কে উপেক্ষা করার একটি প্রচেষ্টা চলছে। এটা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। অমর্ত্য সেন বলেন, এ দেশে ধনী-দরিদ্রের বিভাজন চলছে। নতুন করে যে মন্ত্রিসভা হয়েছে, তা পুরোনো মন্ত্রিসভার মতোই। সবই এক। সামান্য বদল হলেও, তবে এখনো দেশে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী তারা। অমর্ত্য সেনের এই মন্তব্যে সায় দিয়েছেন সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য, তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন প্রমুখ। তারাও বলেছেন, ‘ভারতের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ সমুন্নত রাখতে হবে আমাদের।’
বিডি প্রতিদিন/এএম