১ জুলাই, ২০২৪ ১১:৩৫

সত্যিই কি বলিভিয়ায় অভ্যুত্থান চেষ্টা প্রেসিডেন্টের সাজানো নাটক ছিল?

অনলাইন ডেস্ক

সত্যিই কি বলিভিয়ায় অভ্যুত্থান চেষ্টা প্রেসিডেন্টের সাজানো নাটক ছিল?

বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সি

সম্প্রতি একটি সেনা অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা চালানো হয় বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সির বিরুদ্ধে। মাত্র তিন ঘণ্টা স্থায়ী হওয়া ওই সেনা অভ্যুত্থানকে নতুন সামরিক কমান্ড গঠন করে দমন করে বলিভিয়া সরকার। অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে  সেনাপ্রধান হুয়ান হোসে জুনিগাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপর তাকে আটক করা হয়। কিন্তু আটক হওয়ার পর পর জুনিগা দাবি করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট আর্সির নির্দেশেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন। নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতেই এমনটি করেছেন আর্সি। এর পর পরই জুনিগার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংসদীয় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী আইনপ্রণেতারা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সি।

লুইস আর্সির ভাষ্যমতে, সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান করতে তৎকালীন সেনাপ্রধান হুয়ান হোসে জুনিগাকে কোনও নির্দেশ দেননি তিনি।

বলিভিয়া সরকার জানায়, বুধবার সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জুনিগা। রাজধানী লাপাজে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন ঘেরাও করে ফেলে তার অধীনে থাকা সেনাসদস্যরা। ট্যাংক দিয়ে প্রাসাদের মূল ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টাও করা হয়। এ সময় ভবনটির ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।

ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর সেনাপ্রধান জুনিগাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ করা হয়। এরপর প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের আশপাশ থেকে সরে যেতে শুরু করেন বিদ্রোহী সেনারা।

গত বৃহস্পতিবার আর্সি অভ্যুত্থানের চেষ্টার পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা কখনও জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার অনুমোদন দেব না। সাবেক সেনা কমান্ডার জেনারেল যা করেছিলেন তা হল বলিভিয়ার জনগণের বিরুদ্ধে যাওয়া ও বলিভিয়ার মানুষ যে গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছে সেই গণতন্ত্রকে আক্রমণ করা। আমরা এটা কখনওই করব না।”

জনপ্রিয়তা বাড়াতে প্রেসিডেন্ট নিজেই অভ্যুত্থানের নাটক সাজিয়েছেন— জুনিগার এমন দাবি পুরোপুরি মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মারিয়া নেলা পেদ্রাও। আর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা সংকটের এ দিনে লুইস আর্সির পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এছাড়া বলিভিয়ায় এ অভ্যুত্থান চেষ্টার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলো। আর বলিভিয়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস।

কয়েক সপ্তাহ ধরে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট লুইস আর্সি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। যার মধ্যে রয়েছে গ্যাস রফতানি কমে যাওয়া, বৈদেশিক রিজার্ভ কমে যাওয়া, খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির ঘাটতি এবং মার্কিন ডলারের অভাব।

এ ব্যাপারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফ্র্যাঙ্কলিন পেরেজা বলেন, বলিভিয়া একাধিক ফ্রন্টে সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও প্রাতিষ্ঠানিক। সেই সঙ্গে রয়েছে আর্সির নিজ দলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। এ অবস্থায় একটি স্ব-অভ্যুত্থানের গুজব আর্সির সরকারের ভঙ্গুর অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

বিডি প্রতিদিন/একেএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর