যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো সম্প্রতি ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ওয়াশিংটনে শুরু হতে যাচ্ছে ন্যাটোর ৭৫তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনে অংশ নেবেন জোটের ৩২ সদস্যদেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো ন্যাটোকে একটি বৃহৎ ও শক্তিশালী জোট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
তবে এই সম্মেলন এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। আটলান্টিকের দুই পাশে মধ্যপন্থী ও উগ্র ডানপন্থীদের মধ্যে নির্বাচনী উত্তেজনাও বাড়ছে। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে বিপর্যয়ের পর নিজ রাজনৈতিক জীবন নিয়ে লড়ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ট্রাম্পের ন্যাটো সম্পর্কিত অবস্থান নিয়ে মিত্রদের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আপাতত বাইডেন নির্বাচনী প্রচার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নেতাদের স্বাগত জানাবেন।
উদীয়মান চীনের প্রভাব ঠেকাতে এশিয়ায় ন্যাটোর ক্রমবর্ধমান ভূমিকার গুরুত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাইডেন। তবে সম্মেলনে নজর থাকবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর। তিনি জোটের পক্ষ থেকে দৃঢ় সমর্থনের অপেক্ষায় আছেন। যদিও এবারও ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না।১৯৪৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সামষ্টিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাটো সামরিক জোট। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে ন্যাটোর মিত্ররা কিয়েভের পক্ষে দাঁড়ায়, যা ন্যাটোর প্রতিষ্ঠাকালীন লক্ষ্যেই ফিরে যাওয়া নির্দেশ করে।
রাশিয়ার ত্বরিত বিজয় ঠেকিয়ে দিয়ে পশ্চিমাদের মন জয় করেছে ইউক্রেনীয়রা। তবে রুশ সেনারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এবং পূর্বাঞ্চলে তারা অগ্রসর হচ্ছেন। ন্যাটো সম্মেলনের আগে একজন ইউরোপীয় কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, সম্মুখযুদ্ধে ইউক্রেন একটি ভঙ্গুর অবস্থায় আটকে পড়ায় একধরনের অস্বস্তির মধ্যেই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক পরিকল্পনার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন বাস্তবতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কারণ, ইউরোপের নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ যুগসন্ধিক্ষণে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, রাশিয়া এখন পুরোপুরি একটি স্বস্তিকর অবস্থায় আছে। তারা মনে করছে, শেষ পর্যন্ত তারা সফল হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল