১০ জুলাই, ২০২৪ ১৮:৪৯

ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়াতে পারে: ল্যানসেট

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়াতে পারে: ল্যানসেট

ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা ৯ মাস ধরে নৃশংস আগ্রাসন চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। ইহুদিবাদী সেনাদের এই বর্বরতায় সেখানে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে এক চিঠিতে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে এ চিঠি প্রকাশিত হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওই দিন থেকেই গাজায় নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৮ হাজার ১৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে।

চিঠিতে জোর দিয়ে বলা হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে নিহত ব্যক্তির যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, সম্ভবত সেটি নাটকীয়ভাবে কম। ইসরায়েলি হামলায় এ উপত্যকার বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজারো মানুষ এবং খাবার, চিকিৎসাসেবা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সংকটে পরোক্ষভাবে যে বহু মানুষ মারা গেছে, তাদের ওই হিসাবে বিবেচনায় আনা হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা চিঠিতে আরও বলেন, যুদ্ধের ভয়াবহতার ব্যাপকতা; স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো ধ্বংস; খাবার, পানি ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট; মানুষজনের নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে না পারা; ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-কে অর্থ দেওয়া বন্ধ করার কারণে গাজায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারের মতো মরদেহ চাপা পড়ে আছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার ৩৫ শতাংশ ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। এর আগে গত মে মাসে গাজার নাগরিক সুরক্ষা সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছিল, উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনার নিচে প্রায় ১০ হাজার মরদেহ চাপা পড়ে আছে। এসব মরদেহে পচন ধরায় রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা এয়ারওয়ারস-কে উদ্ধৃত করে চিঠিতে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলায় নিহত এমন মানুষদের গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে, যাদের নাম–পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

তবে হামলায় নিহত মানুষের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে বলেও মন্তব্য করা হয় ওই চিঠিতে।

গাজা উপত্যকার বড়সংখ্যক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা হালনাগাদ করতে মূলত গণমাধ্যমের সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। চিঠিতে বলা হয়, নিহত মানুষ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিতভাবেই বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। এখন অশনাক্ত মরদেহ নিয়ে আলাদা তালিকা তৈরি করছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা ও মানবিক ত্রাণ সরবরাহ শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে এ চিঠিতে। উপত্যকাটির বাসিন্দাদের দুর্দশা–কষ্টের মাত্রা ও প্রকৃতি নিয়ে সঠিক তথ্য নথিভুক্ত করার ওপরও চিঠিতে জোর দেওয়া হয়। সূত্র: মিডল ইস্ট আই

বিডি প্রতিদিন/একেএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর