২৪ আগস্ট, ২০২৪ ১৮:১২

‘পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে’ গণধর্ষণ মামলার আসামির ‘মৃত্যু’

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

‘পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে’ গণধর্ষণ মামলার আসামির ‘মৃত্যু’

কলকাতার আরজিকরের ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার ভারতের আসামে গণধর্ষণের ঘটনা সামনে আসলো। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে পুকুরে ঝাপ দেয়। আর তাতেই মৃত্যু হয় অভিযুক্ত তাফাজুল ইসলামের। 

গত বৃহস্পতিবার আসামের নগাঁও জেলায় ১৪ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই তরুণী যখন টিউশনি শেষ করে রাত ৮ নাগাদ বাড়ি ফিরছিল, তখন ধিং এলাকায় মোটরসাইকেলে এসে তিন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং তাকে গণধর্ষণ চালানো হয় বলে অভিযোগ। এরপর অচেতন ও আহত অবস্থায় তাকে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন এবং তাকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

ওই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবার তাফাজুলকে গ্রেপ্তার করে আসাম পুলিশ। এখনো পলাতক অন্য দুই অভিযুক্ত। 

শনিবার অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে। সেখানে ঘটনার পুনঃনির্মাণ করার সময়ই ভোর ৪ নাগাদ সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে একটি পুকুরে ঝাঁপ দেয় অভিযুক্ত তাফাজুল। এরপর তার সন্ধানে পুকুরে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। দুই ঘণ্টা পর সকাল ছয়টা নাগাদ তার লাশ পাওয়া যায় স্থানীয় ওই পুকুরের ভেতর থেকে। পুলিশের ধারণা প্রাণ বাঁচাতে ওই পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। আর তাতেই তার মৃত্যু হয়। 

নগাঁও জেলার পুলিশ সুপার স্বপ্ননীল ডেকা জানান 'তদন্তের জন্য শুক্রবার দিন রাতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের যায়। এসময় অভিযুক্ত ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করে এবং ঘটনাস্থলের পাশেই পুকুরে ঝাঁপ দেয়।' পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান 'ঘটনার পর আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলের (SDRF) সহায়তা নিয়ে পুকুর থেকে তাফাজুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।' 

বর্তমানে নগাঁও জেলার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ওই তরুণী। ট্রমা থেকে তরুণীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য মনোবিদদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। 

এই ঘটনার প্রতিবাদের শুক্রবার নগাঁও'তে বিক্ষোভ, প্রতিবাদে সামিল হয় সাধারণ মানুষ। ব্যবসায়ীরাও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে। বিভিন্ন সমাজকর্মী ও রাজনৈতিক দলগুলিও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানোর পাশাপাশি নারী ও মেয়েদের সুরক্ষা বাড়ানোর দাবি জানায়। 

এই ঘটনা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কংগ্রেস বিধায়ক শিবমণি ভোরা এবং এআইইউডিএফ বিধায়কের আমিনুল ইসলাম। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন। 

অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন 'নারীদের উপর যখনই কোনো অত্যাচারের ঘটনা ঘটবে, আমাদের অতি তৎপরতার সাথে পদক্ষেপ নিতে হবে। সাধারণ মানুষও যাতে দেখে যে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। যখন এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটে, তখনই সরকারের কঠোর কাদাক্ষেপ নেওয়া উচিত। যদি তা না হয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ে। পশ্চিমবঙ্গের সরকার এই কাজটি করেনি বলেই সেখানে জনরোস আছড়ে পড়েছে। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর