১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:১০

গাজায় দুর্ভিক্ষের ছায়া

অনলাইন ডেস্ক

গাজায় দুর্ভিক্ষের ছায়া

জাতিসংঘ অনেক দিন ধরেই গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করছে

জাতিসংঘের খাদ্য অধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত মাইকেল ফখরি অভিযোগ করেছেন য, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নিক্ষিপ্ত গুলি ও বোমার চেয়েও দেশটির পরিকল্পিত ক্ষুধা সংকটে এখন বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই মানবিক বিপর্যয়ের প্রভাব ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর বহুবছর ধরে বিরাজ করবে। 

সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে ফখরি উল্লেখ করেছেন, ইসরায়েল গাজায় খাদ্য উৎপাদন এবং সরবরাহব্যবস্থাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করেছে। বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করে কৃষিজমি অনাবাদি করা, খেতখামার ধ্বংস এবং মাছ ধরার নৌযান ও বন্দরগুলোকে বিধ্বস্ত করা হয়েছে। ফলে গাজার পুরো জনগোষ্ঠী মানবিক ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

মাইকেল ফখরি তার প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করেছেন, ইসরায়েল কীভাবে পরিকল্পিতভাবে গাজার সমগ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষুধার শিকার করছে। তিনি বলেছেন, যুদ্ধ–পরবর্তী যুগে এমন দ্রুত এবং ভয়াবহ ক্ষুধার সম্মুখীন কোনো জনগোষ্ঠীকে কখনও দেখা যায়নি, যেমনটা গাজার ২৩ লাখ মানুষের ক্ষেত্রে ঘটছে। এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে ইসরায়েলের অবরোধ এবং মানবিক ত্রাণের প্রবেশে বাধার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার দুর্ভিক্ষে ৩৪ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন, যার অধিকাংশই শিশু। ইসরায়েল গাজার কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করার পাশাপাশি খাদ্য প্রবেশে বাধা দিয়ে মানবিক ত্রাণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। 

মাইকেল ফখরি উল্লেখ করেন , ইসরায়েলের পরিকল্পিত ক্ষুধার কৌশল ১৯৯১ সাল থেকে শুরু হয় এবং ২০০০ সাল থেকে গাজা উপত্যকাটি সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণের খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে, কৃষক, জেলে এবং মেষপালকদের হয়রানি এবং হত্যার মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রা ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূমি থেকে উৎখাত করার এই প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, যা মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত আরও বলেন, এই সংকট কোনো নিছক মানবিক বিপর্যয় নয়, বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক এবং কাঠামোগত রাজনৈতিক সমস্যা। গাজার দুর্ভিক্ষ সমাধানের জন্য তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অবরোধ আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ অনেক দিন ধরেই গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর