১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৭:৫৯

কলকাতার মেট্রোতেও সেই গান, ‌‘ও দেশটা তোমার বাপের নাকি...’

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

কলকাতার মেট্রোতেও সেই গান, ‌‘ও দেশটা তোমার বাপের নাকি...’

কলকাতার মেট্রোতে গান গাইছেন তারা। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

কয়টা হবে! সকাল ৭টা কিংবা সাড়ে ৭টা! মেট্রোয় চেপে কেউ তার কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন, কেউ বা স্কুল-কলেজে, কেউ বা আবার নাইট ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফিরছেন। চলতে চলতেই মেট্রোর ভেতরে গান ধরলেন নারী যাত্রীরা। একজন, দুইজন, তিনজন থেকে গোটা কামরার যাত্রীরা গেয়ে উঠলেন সেই প্রতিবাদী গান-‌‘ও দেশটা তোমার বাপের নাকি করছো ছলাকলা, কিছু বললেই ধরছো চেপে জনগণের গলা।’

কেউ আবার নিজের মোবাইল খুলে তা দেখে বাকিদের সাথে গলা মেলালেন। পাশাপাশি হাততালি দিয়ে অন্যদের উৎসাহিত করলেন।

মঙ্গলবার এই চিত্র দেখা গেল কলকাতার মেট্রো রেলের কামরায়। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি।

তবে এবারই প্রথম নয়, কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে এক চিকিৎসক ছাত্রীর নৃশংস মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে এর আগেও বাংলাদেশি শিল্পী ইথন বাবুর সেই প্রতিবাদী গানে মুখরিত হয়েছিল কলকাতার আকাশ-বাতাস।

কলকাতার ধর্মতলার রানী রাসমণি মোড়, গড়িয়াহাট, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, শ্যামবাজার বা লালবাজার (কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর)-প্রতিটি ক্ষেত্রেই আন্দোলনের একটাই লক্ষ্য- ইনসাফ অর্থাৎ ন্যায় বিচার। আর এই ন্যায় বিচারের দাবিতেই কখনো রাত দখল কখনো ভোর দখল-কর্মসূচি নিয়ে চলেছে আন্দোলনকারীরা।

প্রতিবাদের ভাষা কখনও কবিতা, পথনাটিকা, মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালানো, সড়কের উপরেই ছবি আঁকা আবার কখনও ইথুন বাবুর লেখা সেই প্রতিবাদী গান ‘ও দেশটা তোমার...’, কিংবা নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লৌহ কপাট...’।

গত ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালেই কর্মরত অবস্থায় ওই চিকিৎসক ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় সুবিচার চেয়ে গত এক মাস এক দিন ধরে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। তার উপর জুনিয়র ডাক্তারদের যোগদানে এই আন্দোলন এক অন্য মাত্রা পেয়েছে।

রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে আন্দোলন এখন গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন এক নৃশংস কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নেমেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইজারল্যান্ডসহ একাধিক দেশের মানুষ।

এদিকে, মঙ্গলবারও রাজ্যের জেলায় জেলায় প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ।

অন্যদিকে, সরকার ও জুনিয়র ডাক্তারদের উভয়ের পক্ষে ঘোষিত ‘ডেড লাইন’ নিয়ে জোড় লড়াই শুরু হয়েছে। সোমবারই ভারতের শীর্ষ আদালত আন্দোলনকারী ডাক্তারদের মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশ দেয়। পাল্টা ওই সময় সীমার মধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য-শিক্ষা কর্মকর্তার পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি ঘোষণা করেছে জুনিয়র চিকিৎসকরা।

সেই দাবি না মানা হলে আন্দোলন জোরালো হবে বলে ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা। আর এই দাবি নিয়েই এদিন সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবন সাফাই অভিযানের ডাক দিয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাদের সমর্থনে পথে নেমেছে নাগরিক সমাজও। এদিন প্রতীকী মস্তিষ্ক, রজনীগন্ধার মালা হাতে নিয়ে সল্টলেকের করুনাময়ীতে জমায়েত হয় জুনিয়র চিকিৎসকরা।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর