১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০৮

আরজিকর কাণ্ড; আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে সরানো হচ্ছে পুলিশ কমিশনারকে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

আরজিকর কাণ্ড; আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে সরানো হচ্ছে পুলিশ কমিশনারকে

কলকাতার আরজিকর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে এক তরুণী ধর্ষণ ও খুনের ন্যায়বিচার চেয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মেনে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে। সেই সাথে কলকাতা পুলিশের শীর্ষস্থানীয় বেশকিছু রদবদল করা হবে। জুনিয়র চিকিৎসকদের সাথে বৈঠকের শেষে এই কথা ঘোষণা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 

একই সাথে জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মেনে রাজ্যটির স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতার সরকার। 

সোমবার সন্ধ্যায় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বসে। বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্ব) চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার সহ সরকারের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা।  

পরে রাত ১২ টা নাগাদ সংবাদ সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন সন্ধ্যা ৬.৪০ টা থেকে রাত প্রায় ১২ টা পর্যন্ত- পুরো বৈঠক ও তার কার্যবিবরণী তৈরী করা সম্পন্ন হতে সময় লেগেছে (যদিও মূল বৈঠক হয় ২ ঘণ্টা ধরে)। ডাক্তারি ছাত্রদের পক্ষ থেকে আজকের বৈঠকের মিনিটসে ৪২ জনের প্রত্যেকেই স্বাক্ষর করেছে, অন্যদিকে সরকারের তরফে ওই মিনিটসে স্বাক্ষর করেছেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। 

তিনি বলেন 'আজকের বৈঠক খুবই সদর্থক হয়েছে। বৈঠক নিয়ে আমরা উভয় পক্ষই খুশি। জুনিয়র চিকিৎসকরা অনেক বিষয় উত্থাপন করেছে, আমরাও আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি।' 

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জুনিয়ার চিকিৎসকদের তরফে পাঁচটি দাবি করা হয়েছিল। ওদের প্রথম দাবি ছিল আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে, সুপ্রিম কোর্ট তার মনিটরিং করছে। ওটা আমাদের হাতে নেই। বাকি চারটি দাবির মধ্যে তিনটি দাবি মেনে নিয়েছি। 

এরমধ্যে স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা কর্মকর্তাকে সরানোর দাবি উঠেছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে কেবলমাত্র স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানো হচ্ছে। কারণ একসাথে তিনজনকে সরিয়ে দিলে তবে পুরো স্বাস্থ্য দফতর খালি হয়ে যাবে, প্রশাসনটা ঠিকমতো চলতে পারবে না। ওদের বিরুদ্ধে যেহেতু চিকিৎসকদের ক্ষোভ আছে। তাই তাদের ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিয়ে আপাতত দুইজনকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তাকে সরিয়ে তাদের অন্য জায়গায় সম্মানজনক পদে স্থানান্তরিত করা হবে।' 

মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মেনেই পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার পর কলকাতা পুলিশের নতুন কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নর্থ অভিষেক গুপ্তাকে সরানো হচ্ছে। বিকেল চারটের পর মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ প্রজ্ঞাপন জারি করে এসব জানিয়ে দেবেন।  

একইসঙ্গে ছাত্রদের শিগগিরি কাজে ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, মানুষ আপনাদের ভগবান মনে করে তাই আপনাদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করব। সমস্যা থাকলে সমাধান করতে হয়। আলোচনার পথ সব সময় খোলা আছে। বাংলার মানুষ যাতে ভুল না বোঝে সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের তরফ থেকে সব চেষ্টা করা হয়েছে।' 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর