শিরোনাম
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৪:২৩

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে এগিয়ে কে এই মার্ক্সবাদী নেতা

অনলাইন ডেস্ক

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে এগিয়ে কে এই মার্ক্সবাদী নেতা

অনুরা কুমারা দিসানায়েকে

আপদ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো শ্রীলঙ্কায় শনিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই বছর আগে গণবিক্ষোভের মুখে পতন ঘটে গোতাবায়া রাজাপাকসে সরকারের। এরপর এতদিন ধরে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে। তবে সংকট কাটিয়ে ওঠায় নির্বাচন আয়োজন করে শ্রীলঙ্কা। সেই নির্বাচনে ভেলকি দেখাচ্ছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ রাজনীতিক অনুড়া কুমারা দিসানায়েকে।

এখনও ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত গণনা হওয়া ভোটে ৫৩ শতাংশ পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন দিসানায়েকে। শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। কমিশনের তথ্য মতে, ২২ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সাজিথ প্রেমাদাসা। আর তৃতীয় অবস্থানে আছে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।

শ্রীলঙ্কায় এবারের নির্বাচনের আলোচিত প্রার্থীরা হলেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির রনিল বিক্রমাসিংহে, ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার পার্টির নেতা অনুড়া কুমার দিসানায়েক এবং বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়েগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। এছাড়া রাজাপাকসে পরিবারের প্রার্থী নামাল রাজাপাকসেও রয়েছেন। মূলত শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বিশিষ্ট রাজনৈতিক পরিবারগুলোর পরিচিত মুখ দিয়ে পরিপূর্ণ এবারের নির্বাচন। আর তাদেরকে টপকে সামনে এগিয়ে রয়েছেন সাধারণ রাজনীতিবিদ অনুরা কুমারা দিসানায়েকে।

কে এই অনুরা কুমারা দিসানায়েকে?
বামপন্থী জোটের প্রার্থী অনুরা কুমারা দিসানায়েকে মূলত একজন মার্ক্সবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত। তার দল বিমুক্তি পেরেমুনা (জেভিপি), ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের বড় শরিক দল।

৫৫ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কান এই রাজনীতিবিদ মূলত বেশ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী দিচ্ছেন এবারের নির্বাচনে। তার দল সরকারে নেই। তিনি যেই রাজনৈতিক জোটের নেতৃত্ব দেন (ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার) সেই দলটি প্রধান বিরোধী দলও নয়। তারপরও প্রভাবশালী সব প্রার্থীকে পেছনে ফেলে এবারের নির্বাচনে বড় একটি ভোট নিয়ে এগিয়ে গেছেন তিনি।

নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে সঙ্গী জন বালাওয়েগার (এসজেবি) নেতা সজিথ প্রেমাদাসাকে। প্রেমাদাসা শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রমাদাসার ছেলে। দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলাকালে ১৯৯৩ সালে সাবেক ওই প্রেসিডেন্ট আততায়ীর হাতে নিহত হন।

এছাড়া শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেও। রাজাপাকসা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভোটাভুটির মাধ্যমে তাকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেয় শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট। শ্রীলঙ্কার প্রথম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট জে আর জয়বর্ধনের ভাগ্নে তিনি।

২০২২ সালে অর্থনীতি ভেঙে পড়ার পর নিত্যপণ্যের ব্যাপক ঘাটতি এবং আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় শ্রীলঙ্কাতে। মূলত সে সময়ই তার দল এনপিপির জন্য টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব উপস্থিতি দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।

রাজাপাকসে ভাইদের পদত্যাগে তৈরি হওয়া ক্ষমতার শূন্যতা দিসানায়েকে এবং তার দলের জন্য বৃহত্তর পরিবর্তনের পথ প্রশস্ত করে দেয়। প্রতিনিয়ত সামাজিক ন্যায়বিচার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থান দেশটির জনগণকে আকৃষ্ট করে।

এছাড়া নিজের নির্বাচনীয় প্রচারণায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সুশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছান তিনি।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো থেকে ১৭৭ কিমি দূরে অনুরাধাপুরা জেলার থামবুটেগামা গ্রামে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন দিসানায়েকে। কেলানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক হন তিনি। ২০০০ সালে প্রথম সংসদ সদস্য হন দিসানায়েকে।

২০১৪ সালে দিসানায়েককে দল বিমুক্তি পেরেমুনাতে (জেভিপি) নেতা হিসেবে নিযুক্ত পাওয়ার পর থেকে তিনি দলের ভাবমূর্তিটিকে উন্নত করার লক্ষ্যে এবং সহিংস অতীত থেকে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিডি-প্রতিদিন/শআ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর