২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:২১

দার্জিলিংয়েও গরমের প্রকোপ, চালাতে হচ্ছে ফ্যান, কিনতে হচ্ছে এসি!

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

দার্জিলিংয়েও গরমের প্রকোপ, চালাতে হচ্ছে ফ্যান, কিনতে হচ্ছে এসি!

ফাইল ছবি

সমতলে অসহ্য গরমের হাত থেকে মুক্তি পেতে অনেকেরই পছন্দের সেরা গন্তব্য পাহাড়ের রানী দার্জিলিং। কিন্তু চলতি বছরের শরৎ মাসে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়েও! যেখানে জানালা খুললেই দেখা মেলে বরফে ঢাকা পাহাড়। সেই সাথে শরীরে ছোঁয়া লাগে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা হাওয়া। গরম থেকে বাঁচতে সেই দার্জিলিংয়েই এখন চালাতে হচ্ছে ফ্যান, কিনতে হচ্ছে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি)। 

আবহাওয়া অফিস বলছে পাহাড়ে প্রায় ৩০ বছরের উষ্ণতার রেকর্ড ভেঙেছে। সোমবার দার্জিলিংয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮° সেলসিয়াস। গত কয়েকদিন ধরেই পাহাড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ঘোরাফেরা করছে। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও বৃষ্টির কারণে ছাতা হাতে ঘুরতে হয়েছিল পর্যটকদের। আর এখন তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে পর্যটকদের হাতিয়ার সেই ছাতাই। অধিকাংশ হোটেল ও রেস্তোরাঁয় চালাতে হচ্ছে ফ্যান। গরমে নাজেহাল দার্জিলিংবাসী ও পর্যটকদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে আইসক্রিম। 

মনীষা দাস নামে এক নারী পর্যটক জানান 'ভাবতেই পারিনি যে গরমে দার্জিলিঙে এই অবস্থা হবে। কোনরকম লেপ, কম্বল বা শীতের পোশাক প্রয়োজন হচ্ছে না।' 

অনিন্দিতা দে নামে আরেক পর্যটক জানান 'এর আগেও ছয়-সাতবার এসেছি। কিন্তু এরকম গরম দার্জিলিংয়ে কখনো পাইনি। দার্জিলিংয়ে ফ্যান চলছে এটা ভাবতেই অবাক লাগছে।' 

দার্জিলিং জেলার সমতল এলাকা শিলিগুড়িতেও গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা স্থানীয় বাসিন্দাদের। ইলেকট্রনিক্স দোকানগুলিতে বাড়ছে এসি, ফ্যান, কুলার ও ফ্রিজের চাহিদা। 

সুব্রত রায় নামে এক বিক্রেতা জানান 'যে তুলনায় পণ্যের চাহিদা বেড়েছে, সেই তুলনায় জোগান নেই। ক্রেতারা যেদিন এসি মেশিন কিনছেন সেদিনই তাদেরকে ইন্সটল করে দিতে হবে বলে অনুরোধ করছেন কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ যোগান কম। ফলে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে।' 

তীব্র গরমে নাজেহাল স্কুল শিক্ষার্থীরাও। সকালে স্কুল চালুর আবেদন জানিয়ে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী  ব্রাত্য বসুকে চিঠি দিয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। শংকর জানান 'যেই গরম পড়েছে সেই গরমে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা বলছেন এই গরমে ক্লাস করা খুবই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।' 

সব মিলিয়ে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় চরম সমস্যায় পাহাড়বাসি। ভাটা পড়েছে পর্যটকেও। অধিকাংশ হোটেলে বুকিং প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। কারণ গরমের কারণে দুপুরে পর্যটকরা হোটেলের বাইরে বেরোতে পারছেন না। তবে বিকেল গড়াতেই তাপমাত্রা কিছুটা কমছে। আর তখনই ম্যালসহ পাহাড়ের অন্য জায়গা গুলিতে পর্যটকদের সমাগম চোখে পড়ছে। 

যদিও আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে 'মঙ্গলবার থেকে দার্জিলিংয়ে গরম এবং অস্বস্তিকর আবহাওয়া কিছুটা কমবে।' আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন 'মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হবে। সেই সাথে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো বাতাস বইবে। ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকবে দার্জিলিং এর পার্বত্য এলাকায়। সেক্ষেত্রে গরম এবং অস্বস্তিটা উভয়ই কমবে। পরবর্তী তিনদিন বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর ও মালদা জেলাতে। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর