২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২৩:৩৮

বন্যার জন্য ফের মোদিকে নিশানা করলেন মমতা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বন্যার জন্য ফের মোদিকে নিশানা করলেন মমতা

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য 'দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন' (ডিভিসি)- এর ছাড়া পানিকে দায়ী করেছিলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। আর এবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যার পিছনে নেপালের কৌশী নদীর পানিকে দায়ী করলেন তিনি। সেই সাথে এই বন্যার পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনরকম সহায়তা করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

রবিবার দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় একটি প্রশাসনিক বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে গণমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের উদ্ভূত বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন 'গোটা পশ্চিমবঙ্গ আজ বন্যায় বিপর্যস্ত। আগে ডিভিসি'র ছাড়া পানিতে দক্ষিণবঙ্গ ডুবেছে। সরকারকে না জানিয়েই ৫ লাখ কিউসেকের বেশি পানি ছাড়ার কারণে বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রামের আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।' 

এসময় তিনি বলেন '...আর এখন নেপালের কৌশী নদী থেকে ৬ লাখ কিউসেক পানি ছাড়ার কারণে গোটা উত্তরবঙ্গ প্লাবিত। এর পাশাপাশি গঙ্গা নদী চুক্তির পর গত বিশ বছর ধরে ফারাক্কাতেও কোন ড্রেজিং হয় না। যদি ফারাক্কায় ড্রেজিং হতো বা পলি সরানোর কাজ হতো, তবে ফারাক্কায় আরো ৪ লক্ষ কিউসেক পানি ধারণের ক্ষমতা থাকতো। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে এই কষ্ট ভোগ করতে হতো না। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, বাংলা সবসময় বঞ্চিত। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময় প্রত্যেকে আসে, বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেয়, আর নির্বাচন মিটে গেলেই তাদের আর দেখা যায় না।' 

এদিন বিকালে কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মমতা। দমদম বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েও ফের এই অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন 'দক্ষিণবঙ্গ যেমন ভাবে ডিভিসির পানিতে ভেসেছে, তেমনি উত্তরবঙ্গে নেপাল কোশী নদীর পানি ছেড়ে দিয়েছে। ওই পানিটা বিহার রাজ্য হয়ে বাংলায় ঢুকছে। ফলে একদিকে ভুটানের সংকোশ নদীর পানিতে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলার বিপর্যস্ত, আবার কোশী নদীর পানিতে মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রশাসনের তরফে ওই সমস্ত এলাকার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।' 

কেন্দ্রীয় সরকারের নিশানা করে মমতা এও বলেন 'গত ২০ বছর ধরে ফারাক্কায় কোনো ড্রেজিং হয় না। এর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। আগে ওরা ১২০ কিলোমিটার দেখভাল করতো, এখন সেখানে মাত্র বিশ কিলোমিটার দেখভাল করে। কিছুই করে না।' 

তার আরো অভিযোগ 'বাংলাই একমাত্র রাজ্য যে বন্যা রোধের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত। এখনো পর্যন্ত কেউ খবরও নেয়নি, এক পয়সা দেয়ওনি।' 

যদিও রাজ্যের বন্যার পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। কয়েক দিন আগেই শুভেন্দু বলেছিলেন 'বন্যার জন্য মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী। এটা তৃণমূলের ব্যর্থতা। ঘাটালের মানুষের কাছে তৃণমূলের জবাবদিহি করা উচিত। এখানে রাজ্য সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। মমতা ব্যানার্জি নিজে ঘাটালে চলে এসেছিলেন। কিন্তু কি হলো? মানুষের ঘরে চাউল নেই, ত্রিপল নেই, বাচ্চাদের জন্য খাবার নেই। সরকার এখানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ।' 

 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর