গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সমর্থনের প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে মার্কিন ফাস্টফুড চেইন কেএফসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিক্ষোভের মাঝে লাহোরে গুলিবিদ্ধ হয়ে কেএফসির এক কর্মী নিহত হয়েছেন। দেশটির বিভিন্ন শহরে কেএফসির অন্তত ২০টি শাখায় হামলা ও ভাঙচুরের চেষ্টা হয়েছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৭৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে কেএফসির ২০টিরও বেশি শাখায় হামলার চেষ্টা হয়েছে। করাচি, লাহোর ও ইসলামাবাদসহ বিভিন্ন শহরে লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে বিক্ষোভকারীরা কেএফসির দোকানগুলোতে হামলা চালায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত জনতা কেএফসি দোকানে ঢুকে ভাঙচুর করছে এবং আগুন দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। করাচিতে দুটি শাখায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক ভিডিওতে একজন ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারী চিৎকার করে বলেন, "তোমরা যেটা থেকে টাকা কামাচ্ছো, ওরা সেই টাকা দিয়ে গুলি কিনছে।"
লাহোরের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বন্দুকধারীদের গুলিতে কেএফসির এক কর্মী নিহত হয়েছেন। ওই সময় সেখানে কোনো বিক্ষোভ চলছিল না। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা কিনা, তা এখনো তদন্তাধীন।
লাহোর পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফয়সাল কামরান জানান, শহরজুড়ে কেএফসির ২৭টি শাখায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। লাহোরে দুটি সফল হামলা এবং পাঁচটি হামলার প্রচেষ্টা পুলিশ ব্যর্থ করে দিয়েছে।
তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) নামের রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র রেহান মহসিন খান বলেন, তাদের দল ইসরায়েলি পণ্যের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে বটে, তবে কেএফসির সামনে প্রতিবাদ করার কোনো আহ্বান তারা দেয়নি। দলীয় পরিচয়ে কেউ এমন কর্মকাণ্ডে জড়ালেও তা দলীয় নীতির অংশ নয় বলে তিনি জানান।
পাকিস্তানে কেএফসি দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত, যা বারবার যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী জনsentiment-এর শিকার হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের জেরে পাকিস্তানসহ অনেক মুসলিম দেশে পশ্চিমা ব্র্যান্ড বর্জনের ঢেউ চলছে।
এ বিষয়ে কেএফসির মূল প্রতিষ্ঠান ইয়াম ব্র্যান্ডস এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রতিষ্ঠানটির আরেক ব্র্যান্ড পিৎজা হাটও একই কারণে বর্জনের মুখে পড়ায় ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/নাজিম