বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গেস্ট হাউসে গরুর মাংস নিয়ে উত্তপ্ত ভারতের রাজনীতি

দিল্লি পুলিশের আচরণে ক্ষুব্ধ কেজরিওয়াল

কলকাতা প্রতিনিধি

খাবারের তালিকায় গরুর মাংস নিয়ে উত্তাল দিল্লিতে অবস্থিত কেরল রাজ্য সরকারের গেস্ট হাউস (অতিথিশালা)। সোমবার সন্ধ্যায় ওই গেস্ট হাউসে খেতে যায় হিন্দু সেনা সমর্থিত তিন যুবক। সেখানে খাবারের তালিকাতে মালায়লম ভাষায় হাতে লেখা ‘বিফ ফ্রাই’ দেখেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে তারা। বিষ্ণুগুপ্ত নামে এক যুবক সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে বিষয়টি জানায়। এরপরই অন্তত ২০ জন পুলিশ এসে অভিযান চালায়। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় গেস্ট হাউসের কর্মীদেরও। গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গরুর মাংস নয়, তারা মহিষের মাংস পরিবেশন করেছে। বহু বছর ধরেই তারা মহিষের মাংস পরিবেশন করে আসছে। দিল্লি পুলিশের সিনিয়র কর্তা যতীন নারওয়াল জানিয়েছেন, গেস্ট হাউসে গরুর মাংস পরিবেশন করা হচ্ছে- ফোন পেয়ে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ছুটে যায়। কিন্তু সেখান থেকে গরুর মাংসের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। তবে গরুর মাংসের নমুনা না পাওয়া গেলেও বিতর্ক থামছে না। বিতর্ক ওঠার পর মঙ্গলবারই খাবারের তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মহিষের মাংসকে। রাখা হয়েছে কেবলমাত্র চিকেন এবং ফিশ। এদিকে গেস্ট হাউসে পুলিশের প্রবেশ নিয়ে সরব হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মঙ্গলবার টুইট করে পুলিশের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেজরিওয়াল জানান, কেরল গেস্ট হাউসে ঢোকার কোনো দরকারই ছিল না দিল্লি পুলিশের। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর এটা একটা আঘাত। দিল্লি পুলিশ বিজেপি এবং হিন্দু সেনার মতো আচরণ করছে। এদিন দুপুরে কেরল গেস্ট হাউসের সামনেই পুলিশের এখতিয়ার নিয়ে কেরলের একাধিক সাংসদ বিক্ষোভ দেখান। হাতে প্লাকার্ড, পোস্টার নিয়ে পুলিশের ভূমিকার বিরোধিতা করে স্লোগান দিতে থাকেন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ওমান চন্ডীও দিল্লি পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। এদিন গণমাধ্যমের কর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের প্রবেশাধিকারকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘দিল্লি পুলিশের আরেকটু ধৈর্যের পরিচয় দেখানো উচিত ছিল এবং ওই স্থানে ঢোকার আগে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া উচিত ছিল। নিজেদের অধিকার লঙ্ঘন করায় পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে কেরল রাজ্য সরকার। বিজেপির তরফে বলা হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ওই গেস্ট হাউসে ঢুকে পুলিশ ঠিক কাজই করেছে। কারণ এটা আইনশৃঙ্খলারই বিষয়। উল্লেখ্য, গরুর মাংস নিয়ে কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের রাজ্য-রাজনীতি। গত মাসের শেষে গরুর মাংস খাওয়ার গুজব ছড়িয়ে মহম্মদ আকলাখকে (৫০) পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। এরপর গত সপ্তাহেই বিধায়ক হোস্টেলে বিফ পার্টির আয়োজন করায় জম্মু-কাশ্মীরের নির্দল বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার রশিদের ওপর হামলা করার পাশাপাশি তার গায়ে কালি ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর