বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে ‘সরছে’ সৌদি আরব

তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে ‘সরছে’ সৌদি আরব

সৌদি অর্থনীতি সংস্কারের ঘোষণা দেন ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স সালমান —এএফপি

তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব। দেশটির আয়ের প্রধান উৎসও তেল রপ্তানি। সেই তেল রপ্তানির মুনাফানির্ভর অর্থনীতি বদলে ফেলার পরিকল্পনা করছে দেশটি। আর সেই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে দেশটির মন্ত্রিসভা। গত বছরও দেশটির ৭০ ভাগেরও বেশি আয় তেল রপ্তানি থেকে হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় তেল রপ্তানি থেকে দেশটির আয় কমে যাচ্ছে। মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত পরিকল্পনায় সার্বভৌম একটি তহবিল গঠনের জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বৃহৎ তেল কোম্পানি আরামকোর শেয়ার পুঁজিবাজারে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থনীতির সংস্কারের ‘ভিশন-২০৩০’ পরিকল্পনা ঘোষণা করে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তাদের দেশের অর্থনীতিকে ‘তেলাসক্ত’ বলে বর্ণনা করেছেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল আরাবিয়া সংবাদ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘২০২০ সালের মধ্যে আমরা তেল বিক্রি ছাড়াই চলতে পারব।’ সাক্ষাৎকারে তিনি যেসব সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরামকোর পাঁচ শতাংশের মতো শেয়ার পুঁজিবাজারে ছেড়ে দেওয়া। তিনি বলেন, দুই দশমিক পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার (আড়াই হাজার বিলিয়ন ডলার) মূল্যমানের কোম্পানি আরামকোর এক শতাংশ শেয়ারও যদি পুঁজিবাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে তা হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাথমিক দর প্রস্তাব (আইপিও)। এটি পুঁজিবাজারে ফেসবুক বা আলিবাবার শেয়ার বিক্রির রেকর্ডকেও ছড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ব মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ সৌদি আরবের এই পরিকল্পনাকে ‘উচ্চাভিলাষী, ব্যাপক উদ্যোগ’ বলে অভিহিত করেছে। এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলেও সতর্ক করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অন্যতম বড় রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব। সম্প্রতি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় বাজেট ঘাটতিতে পড়েছে। ঘাটতি মেটাতে গত ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে দেশটি। গেল বছর দেশটির তেল রপ্তানি আয় ২৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। 

সৌদি সংস্কার পরিকল্পনায় যা থাকছে : আরামকোর ৫% শেয়ার বিক্রি করা হবে। এই বিক্রি থেকে যে তহবিল গঠিত হবে তার আকার দুই ট্রিলিন ডলার (দুই হাজার বিলিয়ন ডলার)। নতুন ভিসা প্রথা চালু করা হবে, যার মধ্য দিয়ে মুসলমান এবং আরবরা সৌদি আরবে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করতে পারবেন। খনি এবং সমরাস্ত্র প্রস্তুত খাতে বিনিয়োগ করা হবে। কাজের ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে। এএফপি, বিবিসি

সর্বশেষ খবর