ইরাকের মসুলকে আইএসমুক্ত করতে যে অভিযান শুরু হয়েছে তা পরিকল্পনার চেয়েও দ্রুতগতিতে এগিয়েছে বলে দাবি করেছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদি। বৃহস্পতিবার ইরাকি ও কুর্দি বাহিনীর সামরিক অভিযানে নগরীর আশপাশের গ্রামগুলো দখলমুক্ত হওয়ার পর তিনি এ মন্তব্য করেন। ইরাকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে হায়দার আল-আবাদি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী আমাদের ধারণার চেয়েও দ্রুতগতিতে নগরীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এমনকি আমরা যে পরিকল্পনা করেছিলাম, তারচেয়েও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।’ ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসুল নগরীর পুনর্গঠনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে ওই জ্যেষ্ঠ ইরাকি কর্মকর্তারা এখন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে রয়েছেন। মসুল অভিযানে ইরাকি সেনাবাহিনীর ১৮ হাজার সদস্য এবং কুর্দি পেশমেরগা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য অংশ নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা সদস্যও তাদের সহযোগিতার জন্য এখন ইরাকে অবস্থান করছেন।
বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছে কুর্দিরা : মসুলের পূর্ব ও উত্তর দিক থেকে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছে কুর্দি যোদ্ধারা। আইএসের শেষ শক্তিকেন্দ্রটির চারপাশ ঘিরে ফেলার লক্ষ্যে এ অভিযান শুরু করা হয়েছে। দক্ষিণ দিক থেকে ইরাকি সেনাবাহিনী মসুলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এ পর্যায়ে ইরাকের বিশেষ বাহিনীগুলোও এই অভিযানে যোগ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আইএস নেতারা মসুল ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। শহরটিতে এখনো আইএসের পাঁচ হাজারেরও বেশি সেনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কুর্দি যোদ্ধারা জানিয়েছে, তিনটি ফ্রন্ট ধরে অভিযান শুরু করেছে তারা। সম্প্রতি ওই এলাকায় ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনী ও কুর্দি বাহিনীর সাফল্যের পথ ধরেই অভিযানটি শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে কুর্দি বাহিনী বলেছে, ‘আইএসআইএসের (আইএস) চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে নিকটবর্তী বেশ কিছু গ্রাম ও কৌশলগত এলাকাগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করাই এ অভিযানের উদ্দেশ্য।’ ইরাক সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল মান আল সাদি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোররাতে ইরাকি বিশেষ বাহিনী মসুল অভিযানে যোগ দিয়েছে, তারা মসুলের নিকটবর্তী বাতাল্লা শহরের দিকে এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী বিমান হামলা চালিয়ে এ অভিযানে আইএসবিরোধী বাহিনীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে। এর আগে মার্কিন সামরিক বাহিনীর জেনারেল গ্যারি ভোলেস্কি বলেছেন, ‘মসুলের বাইরে আমি কিছু চলাচল লক্ষ্য করেছি; (আইএসের) নেতারা পালিয়ে যাচ্ছে আমরা এমন ইঙ্গিত পেয়েছি।’ তবে কে পালিয়ে যাচ্ছে বা তারা কোথায় পালিয়ে যাচ্ছে, এগুলো নির্দিষ্ট করে বলেননি তিনি। আইএসের শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদি কোথায় আছেন তা জানা যায়নি। কোনো কোনো প্রতিবেদনে তিনি মসুলে আছেন বলে বলা হয়েছে, কিন্তু অন্যগুলো বলছে, তিনি ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় এই শহরটি ছেড়ে চলে গেছেন। বিবিসি।