সোমবার, ১০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

মসুল আইএসের দখলমুক্ত বিজয় ঘোষণা

মসুল আইএসের দখলমুক্ত বিজয় ঘোষণা

ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় মসুল শহরকে সম্পূর্ণরূপে আইএসের দখলমুক্ত ঘোষণা করে গতকাল সেখানে বিজয় ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। এ ঘোষণার পরপরই শহরটির ওল্ড সিটি এলাকায় ইরাকি ফেডারেল পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে দেশটির পতাকা হাতে ও অস্ত্র উঁচিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে — এএফপি

ইরাকের পূর্বাঞ্চলীয় শহর মসুল সম্পূর্ণরূপে আইএসমুক্ত করে সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি গতকাল আইএসমুক্ত মসুল পরিদর্শন করেছেন। এ জয়কে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে তিনি সরকারি বাহিনী ও দেশটির জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এক বিবৃতিতে গতকাল একথা জানানো হয়। মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলার সহযোগিতা নিয়ে গত বছরের ১৭ অক্টোবর থেকে মসুলের পুনর্দখল নিতে লড়াই শুরু করে ইরাকি বাহিনী। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী লড়াই শেষে গতকাল শহরটি সম্পূর্ণরূপে আইএসের দখলমুক্ত করার ওই ঘোষণা আসে। ২০১৪ সালের জুনে শহরটির দখল নিয়েছিল আইএস। ফলে শহরটির নিয়ন্ত্রণ খোয়ানো জঙ্গি এই গোষ্ঠীটির বড় ধরনের পরাজয়। প্রধানমন্ত্রী আবাদি মসুলে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে গতকাল শহরটির পুনর্দখল নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পরনে কালো সেনা ইউনিফর্ম ও টুপি ছিল। এর আগের দিন শনিবারই দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভির এক ঘোষণায় বলা হয়েছিল, শহরটির সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। শহরটির পশ্চিমাঞ্চলীয় ওল্ড সিটির কয়েকটি এলাকায় কয়েকজন আইএস যোদ্ধা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জানিয়ে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালের জুনে মসুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জঙ্গি এ গোষ্ঠীর কথিত প্রধান আবু বকর আল বাগদাদি ইরাক ও সিরিয়া নিয়ে খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। গত নয় মাসের কঠোর প্রচেষ্টায় শহরটির অনেক এলাকা থেকেই আইএসকে হটাতে সক্ষম হয় সরকারি বাহিনী। গত জানুয়ারিতেই মসুলের পূর্বাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে আইএসমুক্ত ঘোষণা করে দেশটির সরকার। তবে শরহটির পশ্চিমাঞ্চল দখলে নিতে গিয়েই সরকারি বাহিনী আইএসের কাছ থেকে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ে। লড়াইয়ের এক পর্যায়ে সরকারিবাহিনীর অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে গত মাসে আইএস যোদ্ধারা মসুলের ঐতিহ্যবাহী গ্রান্ড নূরি মসজিদ বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দেয়। আইএসের এমন কর্মকাণ্ডের পরপরই প্রধানমন্ত্রী আবাদি জানিয়েছিলেন যে, প্রাচীন ওই মসজিদটি ধ্বংসই আইএসের আনুষ্ঠানিক পরাজয়ের শামিল। ওই মসজিদটির সামনে দাঁড়িয়েই ২০১৪ সালে বাগদাদি নিজেদের খেলাফত ঘোষণা করেছিলেন। সিরিয়ার রাকা শহরে গত মে মাসে রাশিয়ার বিমান হামলায় বাগদাদি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিকে, মসুলে আইসের পরাজয় ঘটলে ইরাকের অন্যত্র এখনো জঙ্গি এ গোষ্ঠীটির উপস্থিতি রয়েছে। দেশটির কয়েকটি এলাকা আইএসের নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে। ফলে সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় এখনো হামলার সামর্থ্য তাদের রয়েছে। তবে মসুল হাতছাড়া হওয়া আইএসের সঙ্গে নিঃসন্দেহে একটা বড় ধাক্কা। এছাড়া সিরিয়ায়ও তাদের আধিপত্য ক্রমেই হ্রাস পেতে যাচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি রাশিয়া ও ইরান সেখানে আইএসবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এ লড়াইয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু এলাকা হাতছাড়া হয়েছে আইএসের। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাকা শহর থেকেও তাদের হটাতে মার্কিন সমর্থিত কুর্দিশ-আরব জোট অভিযান চালাচ্ছে। বিজনেস ইনসাইডার, বিবিসি।

সর্বশেষ খবর