ব্যক্তিগত গোপনীয়তা মানুষের মৌলিক অধিকার কারণ, জীবনধারণের ক্ষেত্রে এই গোপনীয়তা খুবই অপরিহার্য। এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল দেশটির শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন ৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এক সর্বসম্মত রায়ে জানায়, ‘সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের জীবনধারণ ও স্বাধীনতার অধিকারের অন্যতম অংশ’। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও আদালতের অন্য বিচারপতিরা ছিলেন জে চেলমেশ্বর, এস এ বোবদে, আর কে আগরওয়াল, আর এফ নরিম্যান, এ এম সাপ্রে, ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, এস কে কাউল এবং এস আবদুল নাজির। প্যান, আধার ও
ক্রেডিট কার্ডের তথ্য সামনে আনা যাবে না বলেও এদিন জানিয়েছেন বিচারপতিরা। নাগরিকের কাছ থেকে বায়োমেট্রিক তথ্য নিলে তা কোথায় ব্যবহার করা হবে তার আইনি যুক্তি সরকারকে দিতে হবে বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। গোপনীয়তার অধিকারের পক্ষে এদিন শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের ফলে আগের দুই দুইটি রায়ই কার্যত খারিজ হয়ে গেল। এর আগে ১৯৫৪ সালে শীর্ষ আদালতের আট সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে এম পি শর্মা রায় দিয়েছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার নয়। যদিও এদিনের রায়ে আধার কার্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে শীর্ষ আদালত কিছুই বলেনি। আধার কার্ড-এর ভাগ্য ঠিক করতে পরে সিদ্ধান্ত নেবে বিচারপতিদের ৫ সদস্যের একটি বেঞ্চ। এদিকে শীর্ষ আদালতের এই রায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বড় ধাক্কা বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। কারণ কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, সংবিধান গোপনীয়তাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে দেখছে না। তবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিনই টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে শীর্ষ আদালত যে মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।